পঞ্চগড়ে  ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবের আমেজ

  পঞ্চগড় থেকে মোঃ কামরুল ইসলাম কামু

প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৫৮ |  আপডেট  : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫১

বাঙ্গালিপনা মানেই নবান্নের উৎসব।শীত এলেই যেমন আমন ধান কাটামাড়াই শুরু হয়। তেমনি সাথে পিঠাপুলি খাওয়ার হিড়িক পড়ে ঘরে ঘরে। বৃদ্ধা থেকে শিশু সবাই পিঠাপুলির উৎসবকে আপন মনে গ্রহন করে। সেই নবান্ন উৎসব ঘিরে সবার মনে আনন্দ আর অনুভূতি ও কম নয়।

প্রায় মাস খানেক আগেই পঞ্চগড় জেলাতে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। কেউ বা কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত মাঠ-ময়দানে। সদর সহ বোদা আটোয়ারী, দেবীগঞ্জ, আটোয়ারী ওতেতুঁলিয়ার সব এলাকার মাঠে ময়দানে সেই আমন ক্ষেতে এখন ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন  প্রায় ছয় মাস ধরে অপেক্ষা কৃষাণকৃষাণীরা।

তবে ক্ষূদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা ব্যয়ের কারনে তেমন ভাবে মুজুরির লোক না নিলেও বড় বা আদর্শ কৃষকরা মুজুরিতে ক্ষেতে কৃষাণকৃষাণি নিয়োগ করেছে। তাদের অনেকে বিঘা অনুযায়ি চুক্তি দিয়ে আমন ধান কেটে নিচ্ছেন। কেউ বা দিন হাজিরায়।

 জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জনা যায়,জেলায় ১লাখ ২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এই ধানকাটা মাড়াই শেষ হতে ১৫ থেকে ২০ দিন লাগতে পারে।  সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় আটোয়ারী উপজেলার রমজানপাড়া গাঞ্জাবাড়ি ও ডাঙ্গির হাট এলাকার কৃষকরা এখনো মাঠে।ডাঙ্গির কৃষক মজিবুর রহমান বলেন আমি ৫ একর জমিতে ধান করেছি। সেই ধান আমার কাটা শেষ। আর নবান্নের কথা বললে তিনি জানান‘ ভাপা পিঠা, পানি পিঠা (চিতুয়া) , দুধ পিঠা, তেল পিঠা এসব তো কিছু দিন খাওয়া চলবে। সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া এলাকার কৃষক হাফিজুল ইসলাম বলেন‘ এ পর্যন্ত এক বিঘা ধান কেটে বাড়িতে এনেছি। আর ১০ বা ১৫ দিনের মধ্যে এই আমন কাটা শেষ হলেই সবার ঘরেই নবান্ন শুরু হবে। তবে এখন কেউ কেউ নবান্ন উৎসব করছে। 

তবে চিরায়ত নিয়মে হেমন্তের মধ্যভাগে নতুন ধান ঘরেে তালার পর বাঙ্গালীর নবান্ন উৎসব শুরু হয়।বাংলার কৃষক সমাজ প্রাচীণকাল থেকে নবান্ন উৎসব পালন করে। কালের বির্বতনে অনেক কিছু বদলে গেলেও কৃষকরা নবান্ন উৎসব পালন করতে ভোলেনি।গ্রাম বাংলায় কৃসকেরা নবান্ন উৎসব পরিপূর্ন ভাবে উদযাপনের জন্য মেয়ে জামাই সহ আত্নীয় স্বজনদের বাড়িতে আমন্ত্রন জানায়।আটোয়ারী উপজেলার বর্ষালুপাড়া এলাকার বাবুল জানান , অগ্রহায়ণের শেষে পিঠাপুলি উৎসব শুরু হয় এলাকায়। পুরো শীত জুড়ে চলে এই পিঠা খাওয়া।

এদিকে জেলায় সরকারি ভাবে এখনো ধান-চাল কেনা শুরু হয়নি। তবে খাদ্য বিভাগ জানায় এবারে চাল ্রপতিকেজি ৪০ টাকা ও ধান প্রতিকেজি ৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার । সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান সরকার রেট দিয়েছে তবে আমার গুদামের বরাদ্দ আমি কেনো পাইনি।এদিকে সদর  উপজেলার ফুটকিবাড়ী বাজারে গিয়ে ধান ব্যবসায়িদের সাথে কথা বললে তারা বলেন ‘ মোটা ধান কনছি ১৫০ টাকা ও চিকন ধান কিনছি ১১০০ টাকা পর্যন্ত।এছাড়া সদর উপজেলার ধুকুরিপাড়া এলাকার কৃষক আমির হোসেন বলেন‘ আমি জমি বর্গা দিয়েছি। বছরে ২৫০ মনের মতো ধান পাই। শনিবার জগদল বাজারে ধান বিক্রি হযেছে ১০৮০ থেেেক ১১০০ টাকা মন। পিঠাপুলির কথা বললে তিনি বলেন‘বাজারে তো একন পিঠার দোকান বসেছে অনেকে। আপাতত: দোকান থেকেই নানা ধরনের পিঠা কিনে খাচ্ছি। ধান এখনো পুরোটা কাটা হয়নি। আত্নীয় স্বজন আসলে বাড়িতে পিঠা তো বানাতে হয়। 


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত