পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা, চারজন আটক

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩৮ |  আপডেট  : ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:২৫

পঞ্চগড়ে  আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ  দলটির  সহযোগী সংগঠনের ৪৭ জন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও গোপনে সংগঠিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া বাদী হয়ে গত ২৬ জুন মামলাটি দায়ের করেন।মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায় যে, ১২ মে  সরকার  আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের সব ধরনের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপরও ২৬ জুন পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ী ইউনিয়নের বজরা বাজার এলাকায় দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাইমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তার ধাক্কামারা ইউনিয়নের কাজীপাড়ার খামারবাড়িতে দলীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন চলছে।পু

লিশের তথ্যমতে, ওই বাসায় যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী মৌসুমীর নেতৃত্বে প্রায় ১১০-১২০ জন নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা, “জয় বাংলা” ও “জয় বঙ্গবন্ধু” স্লোগান, খাবার বিতরণ এবং নগদ টাকা প্রদান করা হয়। নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের উস্কে দেন ও উৎসাহ দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।উক্ত মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি সরকার উৎখাত, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলেন। এমনকি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ভিডিও ধারণ করে ‘আওয়ামীলীগ নিউজ বিডি’ নামক একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেইজে প্রচার করা হয়, যা জনমনে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।পুলিশ অভিযান পরিচালনার সময় উপস্থিত টের পেয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে ঘটনাস্থল থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার ও জব্দ করা হয় বলে জানানো হয়েছে।

মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন: সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাইমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা ও তার তার স্ত্রী কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সদস্য মৌসুমী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু তোয়াবুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক  ও সাপের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত  সম্রাট , সাবেক মেয়র ও ও জেলা মহিলা লীগের সাধারণ  সম্পাদক জাকিয়া  খাতুন, সাবেক সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুব মহিলা লীগ সদস্য নিলুফার  ইয়াসমিন, পৌর  আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক  সভাপতি এস এম হুমায়ুন কবীর উজ্জ্বল, পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম,পৌর আওয়ালীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, ও পৌর যুবলীগের সভাপতি ও  পৌরসভার সাবেক  কাউন্সিলর হাসনাত মোহাম্মদ হামিদুর রহমান , সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান শেখ মিলন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী,ওর ছাত্রলীগের সভাপতি  জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সুজাউদ দৌলা সুজা, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ লায়ন। এছাড় এর পাশাপাশি ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো প্রায় শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়র  করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পঞ্চগড় সদর থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  আব্দুল্লা-হিল জামান জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস  বিরুদ্ধে আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে । এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জোড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে । 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত