নোয়াখালীর প্রতিবন্ধি কিশোরীকে কাউনিয়ায় প্রেমিকের পরিবারের জিম্মায়!

  কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:১৮ |  আপডেট  : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:০৮

ষোড়ষী শারিরীক প্রতিবন্ধি এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নোয়াখালী জেলা থেকে পালিয়ে নিয়ে এসেছে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের চর নাজিরদহ গ্রামের আলমগীর হোসেন (৩০) নামে এক প্রেমিক যুবক। তবে ওই যুবক তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের তথ্য গোপন রেখেছিল প্রেমিকা ওই কিশোরী কাছে। গত শনিবার আলমগীর হোসেন অপ্রাপ্ত কিশোরীকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসলে ঘটে বিপত্তি। প্রথম স্ত্রী কোনভাবেই দ্বিতীয় বিয়ে মেনে নিতে চাইছে না। পরে রাতে স্থানীয় লোকজন প্রতিবন্ধি অপ্রাপ্ত ওই কিশোরী ও যুবককে হাজির করে ইউনিয়ন পরিষদে। 

কিন্তু ওই কিশোরীর বয়স কম হওয়ায় ও অভিভাবক না আসায় এবং থানা পুলিশ অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নিতে অপারগতা জানানোর কারণে প্রতিবন্ধি ওই কিশোরীকে অবশেষে প্রেমিক যুবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের চর নাজিরদহ গ্রামে। গতকাল রবিবার দুপুরে চর নাজিরদহ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ওই কিশোরী আলমগীর হোসেনের বাড়ীতে অবস্থান করছে। 

স্থানীয় লোকজন জানায়, চর নাজিরদহ গ্রামের আব্দুর রহমানের বড় ছেলে দুই সন্তানের জনক আলমগীর হোসেন (৩০) প্রায় দুই মাস পূর্বে নোয়াখাালীর জেলার সেনবাগ উপজেলায় দিনমজুরের কাজ করতে যায়। দিনমজুরের কাজকর্ম করতে থাকা অবস্থায় প্রায় একমাস পুর্বে সেখানে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ষোড়ষী প্রতিবন্ধি ওই কিশোরীকে পালিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে বসবাস করে আলমগীর। গত শনিবার আলমগীর ওই কিশোরীকে নিজ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসে। কিশোরী জানায়, আলমগীর অবিবাহিত পুরুষ। সে বিয়ে-সাধি করে নাই। এখানে এসে জানতে পারি তার স্ত্রী ও দুইটি সন্তান আছে। 

নাজিরদহ গ্রামের বাসিন্দা দুদু মিয়া জানায়, আলমগীর ও কিশোরীর নাকি বিবাহ হয়েছে। তবে বিয়ের কোন কাগজপত্র নাই। তিনি বলেন, মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক তার জন্ম নিবন্ধনে জন্ম তারিখ ১০/০৪/২০০৬ উল্লেখ রয়েছে। শনিবার রাতে গ্রামের লোকজন ছেলে ও মেয়েকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কোন সমাধান করতে না পারায় অবশেষে ওই কিশোরীকে প্রেমিক আলমগীরের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। বিবাহ ছাড়াই একটি মেয়ে দুইদিন ধরে ছেলের বাড়ীতে অবস্থান করছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনা শুনে চলে যায়। মেয়েটি উদ্ধারে কারও কোন তৎপরতা নেই। মেয়েটির পিতার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার মেয়েকে প্রতারনা করে নিয়ে গেছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় কোন অভিযোগ করেন নাই। 

হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ জানান, গত শনিবার রাতে ছেলে ও মেয়েকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসে গ্রামের লোকজন। মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নিতে অপরগতা জানায়। পরে রাতেই মেয়েটিকে ছেলের পক্ষের লোকজন জিম্মায় নিয়ে যায়। কাউনিয়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত সেলিমুর রহমান বলেন, মেয়েটির অভিভাবকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত