তিস্তা নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গন,আতঙ্কে পাঁচ গ্রামের মানুষ

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২৩, ১৭:৪৭ |  আপডেট  : ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:১০

কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামের তিস্তা নদী তীরের বাসিন্দা আঃ সামাদ (৬৫) যার এখন নদী ভাঙ্গান আতংকে প্রতিটি রাত কাটে নির্ঘুম। গত বছর ৮একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে এখন আছে শুধু বাড়িসহ ৩০শতক জমি। আঃ সামাদ বলেন, প্রতি রাতেই ভাঙ্গন আতঙ্কে ঘুম আসে না। নদী পাড়ের সামাদের মতো মাহাবুব, ওমর আলী, সাইফুল, মোতালেব তারাও একই কথা জানান, গত বছর তাদের কারও ৩ একর, কারও ২ একর করে ফসলী জমি নদীতে বিলিন হয়েছে। বর্তমানে টেপামধুপুর ইউনিয়নের হরিচরণ শর্মা, চরগনাই, পূর্ব রাজিব, হয়বত খাঁ, চর বিশ্বনাথ গ্রামের নদী তীরবর্তী সবাই একই আতঙ্কে ভুগছেন।

সরেজমিনে টেপামধুপুর ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী গ্রাম গুলো ঘুরে দেখা গেছে তিস্তার পানি বাড়া ও কমায় এলাকার ফসলি জমি বিলীন হতে শুরু করেছে, আর বসতবাড়ি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তার ভাঙ্গনে এক একটি পরিবার একাধিকবার ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সরিয়েছে বসতভিটা। কেউ কেউ রাস্তার ধারে, বাঁধের পাশে বা অন্যের জমিতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত বছর ভয়াবহ ভাঙ্গনে শত শত একর ফসলি জমি ও বাড়ি ভিটা হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। এলাকাবাসী জানান গত বছর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া তার ব্যাক্তিগত অর্থায়নে বাঁশ দিয়ে বান্ডেল তৈরী করে কোনো রকম ভাঙ্গনটা রক্ষা করেছেন। নয়তো এত দিনে ৫টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যেত। চলতি মৌসুমে আবারও ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তিস্তার ভয়াবহ ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে টেপামধুপুর ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের মানুষের আকুতি।

উপজেলায় প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঈদগাঁ মাঠ, রাস্তা ঘাট, ব্রীজ, কালভাট, স্থাপনা ও ফসলি জমি। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় সামান্যতে বন্যা আর ভাঙ্গনের মুখে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। তারা রিলিফ নয়, দ্রুত নদী খনন করে স্থায়ী সমাধান চায়। তাদের দাবি যেহেতু তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন নেই, তাই নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। যাতে অনাবাদি থাকা তিস্তার বুকের হাজার হাজার একর জমি চাষাবাদের আওতায় আসে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, ১ হাজার একর ফসলি জমি ও ৫শতাধিক বাড়ি নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ক্রস বাধঁ নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪০০০ জিও ব্যাগ দিয়েছে যা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই এলাকা রক্ষা করতে কমপক্ষে আরও আধা কিলোমিটার জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ নির্মান করা প্রয়োজন কিন্তু সেই অর্থ পরিষদের নেই। সরকারী উদ্যোগ ছারা এটি করা সম্ভব নয়। নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিদুল হক জানান, আমি নতুন এসেছি, নদী তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছি, বাণিজ্যমন্ত্রী মহদয়ের সাথে কথা বলে ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত