ডাকরা গনহত্যার ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:০৩ | আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫
বাগেরহাটের রামপালের ডাকরা গনহত্যার ইতিহাস বিকৃত করা ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুস সালাম এর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানবন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রামপাল উপজেলার ডাকরা বধ্যভূমির সামনে ডাকরা বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বাগেরহাট জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অতিন্দ্রনাথ হালদার দুলাল, ডাকরা বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক ও ডাকরা গনহত্যা বইয়ের লেখক বিষ্ণুপদ বাগছি, বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ আলতাফ হোসেন, আব্দুল খালেক হাজী, আব্দুল হামিদ শেখ, শেখ আব্দুল হক, ডাকরা গনহত্যার প্রতক্ষদর্শী শিক্ষক শিশির কুমার বিশ্বাস, পুনেন্দ বিশ্বাস, গনহত্যায় স্বজন হারানো মুক্তা বিশ্বাস, স্বপ্না রানী বিশ্বাস, দিপক রায় প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে ডাকরা গনহত্যার ইতিহাস বিকৃত করছেন। এর অংশহিসেবে মোংলা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুস সালামের নামে ডাকরা গনহত্যা জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছেন। ১৯৭১ সালে ডাকরা গনহত্যার সাথে শেখ আব্দুস সালাম জড়িত ছিলেন না। বরং শেখ আব্দুস সালামের পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের আশ্রয় ও খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্য করার জন্য কোন একটি দুষ্টচক্র এই অপপ্রচার চালাচ্ছে । এই ঘৃন অপপ্রচার ও ইতিহাস বিকৃতি রোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন মানববন্ধনকারীরা। মানববন্ধনে বীরমুক্তিযোদ্ধা, ডাকরা গনহত্যার প্রতক্ষদর্শী, স্থানীয় গন্যমান্য সহস্রাধিক ব্যক্তিরা অংশগ্রহন করেন।
ডাকরা বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেন, অত্যাচারীত স্বজন হারা মানুষ আমরা। এই গনহত্যাকে কেন্দ্র করে কোন অপপ্রচার ও বিকৃত ইতিহাস রচিত হলে তা আমরা মেনে নেব না। ১৯৭১ সালে ডাকরা গনহত্যার সাথে শেখ আব্দুস সালামের কোন সম্পৃক্ততা ছিল না, বরং শেখ আব্দুস সালামের পরিবার ওই সময় হিন্দুদের আশ্রয় ও খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।
ডাকরা গনহত্যা বইয়ের লেখক সাবেক প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুপদ বাগছি বলেন, ডাকরা গনহত্যা বিষয়ক বই লেখার সুবাদে এই এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা, নিহতদের স্বজন ও প্রতক্ষদর্শীদের সাথে আমি কথা বলেছি। গনহত্যার সাথে শেখ আব্দুস সালাম জড়িত এমন কথা কেউ বলেনি। গনহত্যার সাথে শেখ আব্দুস সালামকে জড়িয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, সেটা ইতিহাস বিকৃতির সমান। আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
বাগেরহাট জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অতিন্দ্রনাথ হালদার দুলাল বলেন, জীবন বাজী রেখে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছি। তারমানে এই নয় যে, নিরাপরাধ মানুষকে অপরাধী বলব। যে বা যারা ডাকরা গনহত্যার ইতিহাস বিকৃতের অপচেষ্টা করছেন আমি তাদেরকে ধীক্কার জানাই। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।
ডাকরা গনহত্যার প্রতক্ষদর্শী শিক্ষক শিশির কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৯৭১ সালে শেখ আব্দুস সালাম ডাকরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়তেন। গনহত্যার সাথে আব্দুস সালাম কোনভাবে জড়িত ছিল না।
১৯৭১ সালের ২১ মে শুক্রবার বাগেরহাটের রজ্জব আলী ফকিরের রাজাকার বাহিনী রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। গুলি ও জবাই করে তারা সেদিন প্রায় ছয় শতাধিক সাধারন মানুষকে হত্যা করে। এক সাথে রাজাকার বাহিনীর হাতে জেলার সবচেয়ে বড় হত্যাকান্ডের মধ্যে একটি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত