গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৭ জুন ২০২১, ০৭:৫৬ |  আপডেট  : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১:১৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দিতে কাজ করছি। গত ১২ বছরে আমরা দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করেছি। প্রায় শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ভূমিহীন-গৃহহীনদের আমরা বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে একথা বলেন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ জুন এক অবিস্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬-দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের এই দিন নতুন মাত্রা পায়। বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা আদায়ের লক্ষ্যে এ দিন আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর গুলিবর্ষণ করে। এতে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, আবুল হোসেন, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন। আজকের এই দিনে তিনি ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি শাসন-শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি নবাবজাদা নসরুল্লাহ খানের নেতৃত্বে লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ডাকা বিরোধী দলীয় জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হয়। এতে জাতির পিতা ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সেখানে ঐতিহাসিক ৬-দফা প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাব গৃহীত হয় না। পূর্ব বাংলার ফরিদ আহমদও প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম পাকিস্তানের কয়েকটি পত্রিকা এ দাবি সম্পর্কে উল্লেখ করে বলে যে পাকিস্তানের দুটি অংশ বিচ্ছিন্ন করার জন্যই ৬-দফা আনা হয়েছে। ১০ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাংবাদিক সম্মেলন করে এর জবাব দেন। ১১ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে তিনি ৬-দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন। বাংলার জনমানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ৬-দফার প্রতি সমর্থন জানায়। ৬-দফা হয়ে উঠে দেশের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সনদ।

শেখ হাসিনা বলেন, ৬-দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার ৬-দফার রূপকার বঙ্গবন্ধুকে ৮ মে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু ৬-দফা বাঙালির প্রাণের দাবীতে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৬-দফার প্রতি বাঙালির অকুণ্ঠ সমর্থনে রচিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা। জাতির পিতার ২৩ বছরের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরিধান করে, গণজমায়েত না করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঐতিহাসিক ৭ জুনের সকল কর্মসূচি পালন করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে আমরা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বছরব্যাপী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী-মুজিববর্ষ সীমিত পরিসরে উদযাপন করে আসছিলাম। এ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০-বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ যুগপৎভাবে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আমরা ১৭ মার্চ হতে ২৬ মার্চ পর্যন্ত দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে সফলভাবে উদযাপন করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, দেশ আরও এগিয়ে যাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক রাষ্ট্র। ৭ জুনের শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত