গণতন্ত্র-আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য রাষ্ট্রপতির আহ্বান
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:২৯ | আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং উন্নয়নের মত মৌলিক প্রশ্নে দল, মত, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে আপামর জনগণকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি আজ একাদশ জাতীয় সংসদের ১২তম অধিবেশন এবং ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশনে সংসদে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস এবং তাদের সকল প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, "জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনস্বার্থকে সবকিছুর উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে।"
রাষ্ট্রপ্রধান লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল মহান স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়তেও সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি এ মহান জাতীয় সংসদে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য সরকারি দল ও বিরোধী দলের সকল সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। আবদুল হামিদ বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়া সবাইর পবিত্র কর্তব্য।
সংবিধানের বিধান অনুযায়ি রাষ্ট্রপতি প্রতি বছরের প্রথম অধিবেশনে সরকারের বিগত দিনের সাফল্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন। সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ি এ ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করে এর ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত অন্যান্য অধিবেশনের মতো চলতি অধিবেশনও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা এবং অমর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, তাঁদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ২০২১ সাল ছিল বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের জন্য এক অবিস্মরণীয় বছর। এ বছরেই জাতি উদ্যাপন করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নীতির কারণে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, যা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে সম্প্রীতি সহকারে স্ব-স্ব ধর্ম চর্চা করতে পারে সে বিষয়ে সরকার সচেষ্ট রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবসমূহ নির্বিঘেœ যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপন করা হচ্ছে। তথাপিও ধর্মের নামে কোনো ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে না পারে সে দিকে সবাইর সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের জন্য একটি অনন্য উদাহরণ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে তাঁরই যোগ্য উত্তরসুরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আজ বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানসহ বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ববাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রশিক্ষণ কারিক্যুলাম প্রস্তুত, বিদ্যমান কারিক্যুলাম যুগোপযোগীকরণ এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফায়েড দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে।
তিনি বিগত দেড় দশকে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রপতি সকল সরকারি অর্থের অপচয় রোধপূর্বক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার তাগিদ দেন। তিনি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন শতভাগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে অর্থনীতি, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, খাদ্য-কৃষি (মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন),পরিবেশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নারী ও শিশু উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, গ্রামীণ উন্নয়ন ক্রীড়া ও যুব উন্নয়ন, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সহ বিভিন্ন খাতে সরকারের কর্মকান্ড ও অর্জনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের সুপরিকল্পিত দিকনির্দেশনায় দেশ বহির্বিশ্বে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হিসাবে সুপরিচিত। বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’-এর মাধ্যমে সকল সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। বর্তমানে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’ উৎক্ষেপণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, যদিও করোনা মহামারির কারণে উৎসব পালনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছিল। তারপরও সাড়ম্বরে দেশে ও দেশের বাইরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানগণ অংশগ্রহণ, অনেক বন্ধু দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন পাঠিয়ে অনুষ্ঠানের মর্যাদা বৃদ্ধি ও আনন্দ-উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন।
আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্বের নবম দেশ হিসাবে ১২ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে বাংলাদেশ ৫-জি নেটওয়ার্ক যুগে প্রবেশ করেছে। ৫-জি সহজলভ্যতার কারণে প্রচলিত অনলাইনভিত্তিক সকল কার্যক্রম আরও দক্ষ ও গতিশীল হবে। স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন।
তিনি বলেন, করোনাকালে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মন্ত্রিসভা-বৈঠক, আদালতের কার্যক্রম, অফিস, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভ্যাকসিন কার্যক্রমসহ প্রায় সবকিছুই চলমান রাখা সম্ভব হয়েছে। দেশের ১৮ হাজার ৫০০ সরকারি অফিস ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে এবং ২ হাজার ৬'শ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক ক্যাবল লাইনের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ৮ হাজার ১৭৭টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৬০ কোটি সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ পোর্টাল জাতীয় তথ্য বাতায়ন থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষ তথ্য সেবা দেয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ই-নথির মাধ্যমে ১১ হাজার ৩৭০টি সরকারি অফিসে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। হাই-টেক পার্ক, আইটি পার্ক এবং শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেণ্টারে মোট ১০৩টি অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচটি অবকাঠামোতে ইতোমধ্যে ১২০টি প্রতিষ্ঠান ৫৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এবং এ পর্যন্ত ২০ লক্ষ মানুষের প্রযুক্তি-নির্ভর কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি বলেন, অনলাইন ভূমি-উন্নয়ন কর, ই-নামজারি, ডিজিটাল রেকর্ডরুম, হটলাইন-সেবা, ই-রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন সংযোগ, সায়রাত ও অধিগ্রহণকৃত জমির ডেটাবেজ, রাজস্ব আদালতে অনলাইন শুনানি, সিভিল স্যুট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং এনআইডি ভেরিফিকেশন ভূমিসেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণের কারণে বিগত দুবছর জনসাধারণের জীবন-জীবিকা হুমকির সম্মুখীন হয়। করোনার কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ঝুঁকি বৃদ্ধির পাশাপাশি বেসরকারি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী, দূরদর্শী নেতৃত্ব, অনুপ্রেরণা ও সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত করোনা এবং এর অভিঘাত সফলভাবে মোকাবিলা করে যাচ্ছে। তবে করোনার নতুন ভ্যারিয়েণ্ট ওমিক্রন যাতে বাংলাদেশে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে সেজন্য সরকারকে সতর্কতা অবলম্বনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে নানামুখী আর্থসামাজিক ও বিনিয়োগধর্মী প্রকল্প, কর্মসূচি এবং কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জিডিপির ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির তুলনায় সাময়িক হিসাব অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক চার-তিন শতাংশে, যা আশাব্যঞ্জক।
তিনি বলেন, রেমিটেন্স প্রেরণে নগদ প্রণোদনা এবং পদ্ধতি সহজিকরণের সুফল হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক সাত-আট বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫ দশমিক দুই-ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যাংক ঋণের সুদ হার সিংঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হয়েছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনিয়োগ আকর্ষণে সময়োপযোগী বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্যোগের ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে নিট সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ ছিল ২ হাজার ৫০৭ দশমিক তিন-এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২৮-২৯ নভেম্বর ২০২১ মেয়াদে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। ওই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
তিনি দেশে ব্যাপক শিল্পায়নে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প-প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য মোট ১৯৩টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে সরকার মোট ৭ হাজার ৩২৫ একর জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে।এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বিনিয়োগের ফলে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আবূুল হামিদ বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি মানব-উন্নয়নে বাংলাদেশের প্রভূত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু ৭২ দশমিক আট বছর, অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর এবং অনূর্ধ্ব এক বছর বয়সী শিশু মৃত্যুহার হ্রাস পেয়ে প্রতি হাজারে যথাক্রমে ২৮ জনে এবং ১৫ জনে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলন, প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের রাষ্ট্রীয় সফর এবং বিদেশে নানাবিধ অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক-সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'রূপকল্প ২০২১-এর সফল বাস্তবায়ন শেষে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়িত হচ্ছে। পানি ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশগত পরিবর্তন বিবেচনা করে প্রণীত বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর আওতায় বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে চাই আমরা।'
তিনি বলেন, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে হলে জনমিতির সুবিধা পুরোপুরি ব্যবহার করতে হবে। এ জন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত