কিছুই হলো আদমদীঘি ইউএনও’র দুই নিরাপত্তা কর্মী ও কথিত সাংসাবিদকের
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১৯:০৫ | আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫
আদমদীঘিতে প্রকাশ্য দিবালোকে এক ব্যবসাীয়কে পিটিয়েছেন ইউএনও’র নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অস্ত্রধারী দুই আনসার সদস্য। শুধু পিটিয়ে ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা, ভ্রাম্যমান আদালতে জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছে বেশ কিছু টাকা। ব্যবসায়ী যুবককে পেটানোর ভিডিও ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। কিন্তু টনক নড়েনি প্রশাসনের। ঘটনার ৭দিন অতিবাহিত হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। উল্টো ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চালানো হচ্ছে নানা ফন্দি-ফিকির।
জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী আনসার রাকিবুল ইসলাম ও হাফিজ উদ্দিন সর্টগান অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গত ১৭ এপ্রিল শনিবার উপজেলার চাঁপাপুর বাজারে যায়। সেখানে বিভিন্ন মার্কেটে ও দোকানপাটে তারা হানা দেয়। আচরণ করতে থাকেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারকের মত। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল গালমন্দ করার সাথে ভ্রাম্যমান আদালতে জেল-জরিমানার ভয় দেখিয়ে ভীতিকর অবস্থা এবং ত্রাস সৃষ্টি করে। দোকানে দোকানে শুরু করে চাঁদাবাজি। এসময় জটলা করতে থাকে উৎসুক জনতা। এদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক জেমস নামের এক ব্যবসায়ীও ছিল। সে চাঁদাবাজির চিত্র ধারণ করছে এমন সন্দেহে তাঁকে ধরে ফেলে আনসার সদস্যরা। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অস্ত্রধারি আনসার সদস্যরা ওই যুবককে জেরা করার এক পর্যায়ে বেধরক চড়-থাপ্পড় মারছেন এবং টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে তাঁকে মোটর সাইকেলে করে বাজার থেকে কিছু দুরে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে জেল-জরিমানার ভয় দেখানো শুরু করে। এক সময় ওই ব্যবসায়ীর প্যান্টের পকেট থেকে দুই হাজার দুই শ’ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর আনসার সদস্যের কবল থেকে মুক্ত হয়ে দৈনিক খোলা কাগজ ও দৈনিক বগুড়া পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী কথিত এক সাংবাদিকের কবলে পড়ে। অবশেষে কথিত ওই সাংবাদিককে ৭০০ টাকা দিয়ে মুক্ত হয়। নির্যাতিত ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক দাবী করেন, ওই দিনই ঘটনাটি ইউএনও সীমা শারমিনকে অবহিত করে বিচার প্রার্থী হন। কিন্তু এক সপ্তাহেও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো অভিযুক্ত আনসার সদস্য রাকিবুল ব্যবসায়ী রাজ্জাকের নামে থানায় অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক জেমস্ বলেন, গত বৃহস্পতিবার পুলিশ দিয়ে ফোনে আমাকে ডেকো এনে উপজেলা পরিষদ চত্ত¡রে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে হাত ধরে মিমাংসা করে দেয়।
এবিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ জালাল উদ্দীন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আনসার সদস্যদের চাঁদাবাজির প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন বলেন, গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত আনসার সদস্যরা নির্যাতিত ওই ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জেমস এর নিকট করা অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করার মাধ্যমে সংঘটিত ঘটনার আপোষ-মিমাংসা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই দুই আনসার সদস্যকে ক্যাম্পাস ডিউটির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত