পাটের বাম্পার ফলন

কাউনিয়া সোনালী আঁশ পাট সংগ্রহে ব্যস্ত চাষীরা

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ১ আগস্ট ২০২২, ১৯:৪৪ |  আপডেট  : ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩২

সোনালী আঁশ পাট আর চাষির গলার ফাঁস নয়। উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার নামে খ্যাত রংপুরের কাউনিয়ায় চলতি পাট মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে ক্ষেত থেকে পাট কাটা শুরু হয়েছে। অনেকে পচানো পাট থেকে আশছড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রথমের দিকে আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকলে পরবর্তিতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পাটের আশানুরুপ ফলন হয়েছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে দাম ভালো থাকলেও পরে দাম কমে যাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকে। এ বছর সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকেরা। উপজেলার বেশির ভাগ এলাকার ক্ষেত থেকে কৃষকেরা পাট কাটছেন। কোথাও মাঠ থেকে পাট কেটে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে আর কোথাও চলছে পাট পঁচানোর প্রস্তুতি। আবারো পঁচানো পাট থেকে আশ ছড়ানোর কাজও চলছে। পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন প্রকল্পের মাধ্যমে উফশী পাট উৎপাদনের লক্ষ্যে কাউনিয়া উপজেলায় কৃষদের প্রশিক্ষণ ও উন্নত পাট বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। 

কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে কয়েক বছর আগেও চাষীরা পাট চাষ করে লোকশানে পড়েছেন। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুকে পড়েন। মাঝে স্বল্প পরিসরে যারা আবাদ ধরে রেখেছেন। তারাই লাভবান হয়েছেন। তাদের দিকেই পুনরায় পাট চাষে ফিড়েছে। উপজেলা গদাই গ্রামের চাষী আল আমিন এবার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি বলেন গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই চাষীরা পাট চাষের দিকে ঝুকে পড়েছেন। এতে পাটের আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু পাট কলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ বছর দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

কৃষক গফুর আলী জানান, পাটের চেয়ে পাট খড়ির দাম বেশী হওয়ায় অনেক মহিলা শ্রমিক পাট খড়ির বিনিময়ে পাট ধুয়ে দিচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানান চলতি বছর উপজেলার ৭৫০হেক্টর জমিতে দেশী ও দোষা পাট চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১.৭ বেল। কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীন বলেন অন্যান্য বছরের তুলনায় বাজারে পাটের দাম ভালো যাচ্ছে। গত বছরে ১৮০০ টাকা দরে পাট বিক্রি করেছে। চলতি বছরের শুরুতে ২৫০০ থেকে ৩হাজার টাকা মণ পাট বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় পাট উৎপাদন হয়েছে ভালো।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত