মারাত্বক দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, কর্তৃপক্ষ দর্শকের ভূমিকায়
কাউনিয়ায় যত্রতত্র পশু জবাই

প্রকাশ: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:০০ | আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২২

রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও নির্মাণ হয়নি স্লোটার হাউস। উপজেলার প্রানকেন্দ্র সহ বিভিন্ন হাটবাজারে যত্রতত্র পশু জবাইয়ের ফলে পরিবেশ মারাত্বক ভাবে দূষিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দর্শকের ভূমিকায়।
সরেজমিনে উপজেলার প্রানকেন্দ্র বাসস্টান্ড সহ বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে যত্রতত্র পশু জবাইয়ের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরীক্ষা ছাড়াই বিভিন্ন এলাকায় পশু জবাই করে বাজারে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। পশু জবাইয়ের পূর্বে পশু রোগমুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করে জবাইয়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভার হাট বাজার গুলোতে। উপজেলা সমন্বয় মিটিংএ বহুবার আলোচনা হয়েছে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে একটি স্লোটার হাউস নির্মাণের। উপজেলা প্রশাসন বারবার নির্মাণের আশ^াস প্রদান করলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে সাবেক পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশে নোংড়া অপরিচ্ছন্ন স্থানে পশু জবাই, নোংরা পরিবেশে চলে পশুর চামড়া ছাটাই ও খালের পানি দিয়ে ধোয়ার কাজ। পশুর রক্ত পচে ও গবরের দূর্গন্ধে সড়ক পথে চলাচলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পথচারী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণকে। আর যেসব বাজারে জবাইখানা রয়েছে সেগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। দূর্গন্ধে কসাইরা সেখানে কাজ করে না। নোংরা পরিবেশে চলে পশুর চামড়া ছাটাইয়ের কাজ। ফলে পরিবেশ মারাত্বক ভাবে দুষিত হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারি পরীক্ষা না করিয়ে রোগাক্রান্ত, দুর্বল গরু, মহিষ, ছাগল জবাই করে বিভিন্ন বাজারে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে মাঝে মধ্যেই মৃত পশুর মাংসও বিক্রি করা হয় এসব দোকানে। বেশ কয়েকবার ধরাও পরেছে। তাছাড়াও ভেরার মাংস কে ছাগলের আর মহিলা ছাগলের মাংস কে খাসির মাংস বানিয়ে মাংস বিক্রি চলছে হরহামেশাই। কসাইদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি উপজেলাবাসী। নিজেদের ইচ্ছেমত দামে মাংস বিক্রি করছে কসাইরা। এ যেন দেখার কেউ নেই। এদিকে রোগাক্রান্ত পশুর মাংস খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষ। পশু জবাইয়ের পূর্বে ডাক্তারী পরীক্ষা করেন কিনা জানতে চাইলে বাস স্টান্ডের এক মাংস বিক্রেতা জানান, আমরা পশু জবাই করি ভোরে ওই সময় ডাক্তার পাওয়া যায় না। আমরা সুস্থ পশুই সব সময় জবাই করি। পথচারি রফিক জানান, প্রকাশ্যে পশু জবাই করলে সেটা মানুষের মনে দারুণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশুদের মনের খুবই প্রভাব ফেলে। তাদের মন থেকে মায়া মমতা ও উঠে যেতে থাকবে। বড় হতে হতে তাদের মাঝে নিশংসতা ও বাড়বে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুজয় সাহা জানান, ১জন সেনেটারি ইন্সপেক্টর ছিলেন তিনি বদলি হয়ে গেছেন। আশরাফুল ইসলাম নামের একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তাকে দেখতে বলবো। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এআরএম আল মামুন জানান, পশু জবাইয়ের পূর্বে পরীক্ষা করা ছারা জবাই করা ঠিক না। গত ৯ জানুয়ারী আমরা মাংস ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্ট করে তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক মত করার জন্য। ১২ জানুয়ারী উপজেলার প্রমিনেন্ট ২২ জন মাংস ব্যবসায়ীকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জুনোটিক ডিজিজ ও মাংস ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট আইন কানুন বিষয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। আগামী পরিষদের সমন্বয় সভায় স্লোটার হাউস নির্মানের বিষয়ে প্রস্তাব দিব যেন দ্রুত এটি করা হয়। ইউনিয়নের হাটবাজার গুলোতে বাজার কমিটি বিষয়টি দেখভাল করা প্রয়োজন। এলাকাবাসী দ্রুত স্লোটার হাউস নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত