কাউনিয়ায় বৃষ্টিতে আলু ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি, কৃষকেরা হতাশ
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:১৬ | আপডেট : ৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৩
বৈরি আবহাওয়া ও হঠাত বৃষ্টিতে কাউনিয়া উপজেলার নিচু জমির আলু ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় কৃষকেরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার কৃষকরা আলুর ভালো ফলনে এতদিন আশাবাদী হয়ে থাকলেও অকাল ঝড় বৃষ্টিতে সে আশা ম্লান হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা । অনেক এলাকায় কৃষকরা জমিতে সেচ দেওয়ার পর পরই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় আলু ক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আলু ক্ষেত থেকে পানি বের করে দেওয়ার উপায় খুঁজছে কৃষকরা। বৃষ্টির পর লেড বাইড (নাবি ধবজা) রোগ থেকে ক্ষেত বাঁচাতে ছত্রাক নাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে চাষীরা। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা নামার আগ পর্যন্ত চাষীরা তাদের আলু ক্ষেতে কাজ করছে। সঠিক পরিচর্যায় লকলকিয়ে উঠা আলু ক্ষেত রক্ষা নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছে। সোনাতন গ্রামের কৃষক হারিস মিয়া বলেন আলু রোপনের শুরুতেই পটাশ সারের ব্যাপক ঘাটতি থাকায় চাষীদের বহু ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) পটাশ সারের সরকারী মূল্য ৭শ'৫০ টাকা হলেও চাষীদের দোকান থেকে ১১শ'৫০ থেকে ১৩শ'৫০ টাকা দরে ক্রয় করতে হয়েছে। পরে কৃষি বিভাগ একটি পটাশ সারের বস্তা নিতে চাইলে তার সাথে দুটি ঢ্যাপ সারের বস্তা নেওয়ার শর্ত জড়িয়ে দেয়। তবুও কৃষক আলৃর ভালো ফলনের আশায় প্রয়োজন না থাকলেও বাধ্য হয়েই একত্রে দুই বস্তা ঢ্যাপ সার সহ ১বস্তা পটাশ সার নিতে বাধ্য হয়। এতে করে আলুর ভালো ফলনে হোঁচট খায় চাষীরা। এর পর মরার উপর খাঁড়ার ঘা বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় আলু ক্ষেত তলিয়ে যায়।
প্রাননাথ চর এলাকার চাষী আবুল কালাম বলেন গত বছর আগাম আলুর ভালো দাম পেয়ে এবারো আগাম জাতের কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, গ্রান্যুলা, রোমানা, বগুড়াই আলু চাষাবাদ করেছি কিন্তু এবার আগাম জাতের আলুর ভালো বাজার পাচ্ছি না। তাই আমরা চাষীরা হতাশ হয়ে পড়েছি। এখন অপেক্ষা করছি দেরীতে আসা আলুর বাজার যেন ভালো পাই আমরা। বর্তমানে প্রতি বস্তা কার্ডিনাল আলু বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬'শ টাকা দরে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৪ হাজার ৫শ' হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করেছেন।
কৃষক সূত্রে জানা গেছে বৃষ্টিতে মাটিয়াল ও নিন্ম এলাকার প্রায় ৫শ বিঘা জমির আলু নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তাছাড়াও আলুতে পচন সহ খাউর রোগ দেখা দিতে পারে। করোনা কালে চাষীরা ব্যাপক ঝুঁকি নিয়ে আলু চাষাবাদ করলেও ভাল ফলন ও ভালো দাম পাওনা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শাহানাজ পারভীন বলেন আলুর ফলন বৃদ্ধি ও রোগ ব্যাধি থেকে ক্ষেত রক্ষায় নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। ঝড়-বৃষ্টি সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ উপজেলায় আলুর কী পরিমান ক্ষতি হবে তা মাঠ পর্যায়ে জরিপ চালানো হচ্ছে। সময় আছে কৃষকরা সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে সাময়িক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত