করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ খুবই সফল: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশ: ৭ জুন ২০২১, ১৫:২৬ | আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৯
বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে খুবই সফলতা দেখিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশ বলেও তিনি জানান। স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ছাড়া দেওয়া হয়নি বলেও মন্তব্য তার।
সোমবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সম্পূরক বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খাতে মঞ্জুরি দাবির উপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় সংসদ সদস্যদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি এসব কথা জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় আমরা কিন্তু মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে কমিটি করা হয়েছে। বন্দরে স্ক্যানারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা উপজেলা পর্যায়ে ছয় হাজারের মতো আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। মাত্র একটি ল্যাব ছিল, এখন ৫০০টি ল্যাব কাজ করছে। ১৫০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট করা হয়েছে।
‘১৩ হাজার বেড অক্সিজেন লাইনের আওতায় আনা হয়েছে। আমরা ৫০ লাখ লোককে টেলিমেডিসিন সেবা দিয়েছি। ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছি, ভ্যাকসিন চলমান। এসব উন্নয়নের কারণে আমাদের দেশে মৃত্যুহার দেড় শতাংশ। সারা পৃথিবীতে মৃত্যুর হার আড়াই শতাংশ। করোনার কারণে কেউ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারছে না। তারা এই দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। দেশে সেই সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কিনছি। ভারতে করোনা অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে তারা দিতে পারছে না। চীন, রাশিয়া থেকে আনার ব্যবস্থা করছি, চুক্তি হয়েছে। চীন ৫ লাখ টিকা উপহার দিয়েছে। আরও ৬ লাখ আগামী ১২/১৩ তারিখে আসবে। বাংলাদেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে খুবই সফলতা দেখিয়েছে। ফলে অর্খনৈকিক প্রবৃদ্ধি শতকরা ৬ শতাংশে আছে। অনেক বড় বড় দেশ এটা পারেনি বলে ধরাশায়ী হয়েছে। বাংলাদেশ সেটা পেরেছে বলে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক আছে। যারা বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলেন তারা এটা উপলব্ধি করছেন। আমরা মনে করি বরাদ্দ বাড়ালে ভালো হয়।
চীনের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের দেড় কোটি ডোজ টিকা আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (৭ জুন) স্পিকার শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, চীন থেকে ইতোমধ্যে ৫ লাখ ডোজ টিকা উপহার এসেছে, যা গত ২৫ মে থেকে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আরও ৬ লাখ ডোজ অনুদান হিসেবে শিগগিরই পাওয়া যাবে। সিনোভ্যাকের দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। শিগগিরই এই টিকা দেশে আনার চেষ্টা চলছে।
সেরাম থেকে টিকা সংগ্রহের বিষয়ে তিনি আরও জানান, সেরাম থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি হয়েছিলো। এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ ডোজ সংগ্রহের চেষ্টা করছে সরকার।
এখন পর্যন্ত সেরামের সরবারাহ করা ৭০ লাখ এবং ভারত সরকারের উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলিয়ে মোট ১ কোটি ২ লাখ ডোজের মধ্যে ১ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ২ লাখ ডোজ এখনো আছে। এছাড়াও ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকাদান শিগগিরই শুরু হবে। সেই সঙ্গে রাশিয়া থেকে ১ কোটি ডোজ স্পুটনিক-ভি টিকা কেনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিকে আমরা কিন্তু ছাড় দিচ্ছি না। স্বাস্থ্যখাতে যেখানে দুর্নীতি হয়েছে তারা কিন্তু জেলে আছে। স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন চলমান। বাংলাদেশে অক্সিজেনের অভাব হয়নি। অক্সিজেনের ৩০টি প্ল্যান্ট বসিয়েছি, আরও ৩০টি প্রক্রিয়াধীন। করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার নিচ্ছি। ভ্যাকসিন কিনছি, আরও অনেক কিনতে হবে। প্রত্যেক ব্যক্তির ভ্যাকসিনের জন্য তিন হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদের চিকিৎসার জন্য সরকারের ১৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আর যারা আইসিইউতে থাকছেন তাদের জন্য ব্যয় ৫০ হাজার টাকা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত