করোনা জটিলতায় খালেদা জিয়ার হার্ট-কিডনি আক্রান্ত: মির্জা ফখরুল

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ মে ২০২১, ১৫:০১ |  আপডেট  : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩২

করোনা পরবর্তী জটিলতার অংশ হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হার্ট ও কিডনি আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান। 'সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম, রুহুল আমিন গাজী এবং নিপুন রায় চৌধুরীসহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি চাই' শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের কাছ থেকে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে যেটা পেয়েছি, তার অক্সিজেন সিচুয়েশন এখন বেশ ভালো, টেম্পারেচার এখন নেই এবং তার শ্বাসকষ্টও এখন নেই। কিন্তু যেটা একটু উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়, তার করোনা পরবর্তী যে জটিলতা, সেই জটিলতায় তার হার্ট ও কিডনি একটু আক্রান্ত। এটা নিয়ে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত।'

তিনি বলেন, 'তারা (চিকিৎসকরা) চেষ্টা করছেন, এটাকে তারা কিভাবে নিরাময় করবেন। তবে আমরা আশাবাদী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।'

'রাতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম' উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'বৃহস্পতিবার উনাকে দেখে একটু ভালো লেগেছে। ভালো লেগেছে, কারণ আমি তার মুখে একটু হাসি দেখেছি। যেটা এই কয়েকদিন ছিলো না। একেবারেই ছিলো না। তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে, করোনা সংক্রান্ত অনেকগুলো জটিলতা দেখা দেয়। আর শ্বাসকষ্ট যখন বেশী দেখা দেয় তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।'

চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমি অত্যন্ত ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই আমাদের চিকিৎসকদের। যারা সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে তার চিকিৎসা করছেন। প্রতিদিন তার মেডিকেল বোর্ড করছেন এবং প্রতিদিন মনিটর করে তার চিকিৎসা দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের সাথে তারা যোগাযোগ রাখছেন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ের সবার আগ্রহ রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, ম্যাডাম সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কারণ আমরা সব সময় দোয়া করেছি এবং সারাদেশের মানুষও দোয়া করেছেন।'

সরকার রোজিনাকে দিয়ে সব সাংবাদিকদের শিক্ষা দিতে চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেছেন, এটাই হলো ফ্যাসিবাদের চরিত্র। তারা মানুষকে ভয় দেখিয়ে স্তব্ধ করে দিতে চায়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকার সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করেছে দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে রোজিনা ইসলাম, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের সব মানুষ আজকে নির্যাতিত, নিপীড়িত। শফিক রেহমানের মতো মানুষকে ২১ দিন ফ্লোরে শুয়ে থাকতে হয়েছে। রুহুল আমীন গাজী কারাগারে। বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায়ের জামিন হয় না। আমাদের এখন একটাই পথ, এই দানবকে সরাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জের নেতা মাওলানা ইকবালকে তিন/চারবার রিমাণ্ডে নিয়েছে। রিমাণ্ডে অত্যাচার নির্যাতনে বৃহস্পতিবার তিনি মারা গেছেন। এরা মানুষ না? কেউ অন্যায় করলে তার বিচার হবে। কিন্তু পুলিশ কাস্টডিতে রিমাণ্ডের নামে নির্যাতন করে পিটিয়ে মেরে ফেলবেন? এটা বন্ধ করেন।


মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ডিউইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই সিকদার, মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজমুন নাহার, মহিলা দল নেত্রী নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আকতার প্রমুখ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত