আর্সেনিক ঝুঁকিতে দেশের ১১ ভাগ মানুষ: সংসদে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৪, ১৪:৩১ |  আপডেট  : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১

দেশের ১১ ভাগ মানুষ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফের যৌথ জরিপ প্রতিবেদন ‘মাল্টিপল ইনডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে, ২০১৯’ অনুযায়ী—দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ ভাগ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

মঙ্গল (১১ জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।

আর্সেনিকের কবল থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে গভীর নলকূপ ছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পুকুর খনন ও পুনঃখননসহ সৌরচালিত পন্ড স্যান্ড ফিল্টার স্থাপন করা হবে। এতে ২০২৫ সালের মধ্যে আর্সেনিক দূষণ ঝুঁকি ৫-৬ ভাগে নেমে আসবে।’

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকারদলীয় এমপি ফরিদুন্নাহার লাইলীর প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা শহরে মশক নিধনে সরকার নতুনভাবে ‘ঢাকা মশক নিবারণী দফতরের কার্যক্রম’ দেশব্যাপী বিস্তৃত করতে এই দফতরের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) সংশোধন করে একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদফতর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মশক নিবারণী দফতরের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন জনবল সৃষ্টি, যন্ত্রপাতি ও মানসম্মত কীটনাশক কেনার পাশাপাশি মশক কীট পরীক্ষার জন্য একটি স্থায়ী ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

স্বতন্ত্র এমপি খসরু চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ড্রোনের মাধ্যমে মশার প্রজননকেন্দ্র চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের সব ওয়ার্ডে প্রতিদিন লার্ভিসাইডিং এবং অ্যাডাল্টিসাইডিং করা হয়। এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাড়ি পরিদর্শন ও এর চারপাশে লার্ভিসাইডিং এবং অ্যাডাল্টিসাইডিং করা হয়ে থাকে। ড্রোনের মাধ্যমে মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।’

ডেঙ্গুর হট স্পটগুলোতে বিশেষভাবে নজরদারি করা হয় দাবি করে তিনি জানান, মশক নিধন কর্মীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, স্কাউট, জনপ্রতিনিধি ও ইমামদের সম্পৃক্ত করে বিশেষ মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের এডিপি'র ডেঙ্গু মোকাবিলা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য চলতি অর্থবছরের ৩২ কোটি এবং পৌরসভায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা খাতের আওতায় ইউনিয়নের অনগ্রসরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য ১০০ কোটি টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে।

শফিউল আলম চৌধুরীর আরেক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুর জন্মের পরপরই জন্ম নিবন্ধন ইস্যুর ব্যবস্থা আছে। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন অনুযায়ী, শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক বা নির্ধারিত ব্যক্তি শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের কাছে প্রদানের জন্য বাধ্য থাকবেন। এছাড়া হাসপাতালে জন্মগ্রহণকারী শিশুর জন্মের পরপরই হাসপাতাল থেকে নিবন্ধকের কার্যালয়ে জন্মনিবন্ধনের জন্য ই-নোটিফিকেশন পাঠানো হয়ে থাকে। প্রাপ্ত তথ্য এবং ই-নোটিফিকেশন অনুযায়ী, নিবন্ধক (সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র বা তাদের দেওয়া ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নিবন্ধন শেষ করে থাকেন। শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে কোনও ধরনের ফি ছাড়াই  জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

 

সান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত