আদমদীঘিতে ২৫ শে মার্চ প্রথম শহীদ হন খোদেজা, খিরমন ও মজিদ

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ১৯:৪৬ |  আপডেট  : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৫

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অবাঙ্গী অধ্যষিত পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার শহর। সে সময়ে এ শহরে এদের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারেরও বেশি। নিরীহ-শান্তি প্রিয় বাঙ্গালীর উপর তাদের নির্যাতন নিপীড়ন বর্ণনাতীত। ৭১ এর ২৫ শে মার্চ ঢাকার মত সান্তাহারেও নেমে এসেছিল কাল রাত। এ দিন রাতে অবাঙ্গালীরা যুগীপুকুরে এসে সে সময়ের খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডাঃ কিসমতের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ডাঃ কিসমত ও তার স্ত্রী খোদেজাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুচিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে। মরে গেছে মনে করে ফেলে রাখে বাড়ির পার্শ্বে। এরপর আগুন ধরে দেয় তার বাড়িতে। এতে পুড়ে কয়লা হয়ে শহীদ হন ডাঃ কিসমতের স্ত্রী খোদেজা বেগম, শ্বাশুড়ী খিরমন বিবি এবং ওই বাড়িতে আশ্রিত আব্দুল মজিদ। পরদিন ২৬ মার্চ সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষব্ধ হয়ে উঠে বাঙ্গালীরা। সে সময় ছাত্রলীগের আদমদীঘি থানা শাখার সভাপতি আজিজুল হক ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদের আহবানে প্রতিবাদ সভা হয়। প্রতিবাদ সভায় সিদ্ধান্ত হয় অবাঙ্গালীদের সমচিত জবাব দেয়া হবে। 

এই আহবানে সারা দিয়ে ২৭ মার্চ আদমদীঘি থানার ছাতনী, ঢেকড়া, পাঁল্লাকেল্লাপাড়া, প্রান্নাথপুর, ডাঙ্গাপাড়া, দড়িয়াপুর, তারাপুর, মালসন, সান্দিড়া, দমদমা, কায়েতপাড়া, কাশিমিলা, উথরাইল সহ আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী মানুষ মিছিল নিয়ে সান্তাহার অভিমুখে আসছিল। সকার ৮টার দিকে দক্ষিণ দিক থেকে কয়েক হাজার বাঙ্গালীর মিছিল রেলওয়ে ইয়ার্ডের পূর্ব পার্শ্বে গো-ডাঙ্গায় এলে সান্তাহার রেলওয়ে থানার অবাঙ্গালী পুলিশরা গুলি চালায়। তাদের গুলির আঘাতে প্রথমেই লুটিয়ে পড়ে ঢেকড়া গ্রামের মহাতাব হোসেন। তারপর শহীদ হন ওই এলাকার পাল্লা কেল্লাপাড়া গ্রামের আখের আলী। শহীদ হন পশ্চিম ছাতনী গ্রামের এস.এম আবু জালাল। অবাঙ্গালীদের নির্বিচারে গুলি ও বোমা বিষ্ফোরনে নিরস্ত্র মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটে। সবাই পিছু হটলে ওই ৩ শহীদের লাশ নিয়ে অবাঙ্গালীরা রেলওয়ে ইয়ার্ড কলোনী মসজিদের সামনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে উল্লাশ করে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত