আওয়ামী লীগের সম্মেলন সাদামাটা হলেও নেতা-কর্মীদের ঢল নামবে: কাদের

অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ জন্য তিনি সব কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

এক মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির রেকর্ড আর প্রবাসী আয় ঊর্ধ্বমুখি ধারায় ফেরার পাশাপাশি আমদানি কমতে থাকায় রিজার্ভের ফের ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যে এমন বক্তব্য এলো ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে।

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী ২৪ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে এই সম্মেলন। সেই আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় উঠে এলো অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই সময় সবচেয়ে বেশি দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামনে আরও চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।’

আগের দিন বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ টানা দুই সপ্তাহ বেড়ে ৩৪ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছার খবর আগে। নিম্নমুখি রিজার্ভ গত ৮ ডিসেম্বর ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৪ দশমিক ০২ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছিল।

গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাওয়ার পর এক বছরের কম সময়ে তা ৩৪ বিলিয়নের নিচে নেমে আসার পর তৈরি হয় উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। এর মধ্যে এই প্রথম রিজার্ভের ইউটার্ন দেখা গেল।

বিএনপির দেশ মেরামতের ঘোষণা নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘যারা রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে তারা কী করে দেশের মেরামত করে? দেশ মেরামত করেছেন শেখ হাসিনা। বিএনপির আমলের চেয়ে এখন সব কিছু ভালো আছে। দেশের মধ্যে যা মেরামত, তা আওয়ামী লীগই করছে।’

বিএনপি ঘোষিত ‘ভিশন ২০৩০’ কোথায় এবং কী অবস্থায় আছে তাও জানতে চেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করেছি। তারা একটার পর একটা কর্মসূচি দেয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের কাউন্টার হিসেবে ‘ভিশন ২০৩০’ দিয়েছিল। সেটা কোথায় এখন?

‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম সেটা বাস্তবায়ন করেছি। আগামীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। শৃঙ্খলা না থাকলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব না। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শৃঙ্খলা রাখতে হবে।’

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে যে জাঁকজমক থাকবে না, সেটিও স্পষ্ট করেন কাদের। তবে এও জানান, নিষ্প্রাণ হবে না এই আয়োজন।

কাদের বলেন, ‘সম্মেলন সাদামাটা হলেও নেতা-কর্মী কমবে না। সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের ঢল নামবে। দেশের মানুষ কষ্ট আছে ভেবেই এবার সম্মেলনে সাজসজ্জা করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন। দেশের মানুষের কথা ভেবেই এবারের সম্মেলনে সাদামাটা করা হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, যুব লীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেসবাহুল হক সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান।