পঞ্চগড়- ঠাকুরগাঁওয়ের রেলপথে দেড়যুগের পুরনো বগি সংযোজন  

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২ মার্চ ২০২৪, ১৯:৩৫ |  আপডেট  : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫১

হঠাৎ করেই পঞ্চগড়- ঢাকামুখী রেলপথে যাত্রীসেবার মান কমে গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন যাত্রী সাধারন। সংযোজিত করা হয়েছে ১৮ বছরের পুরনো বগি।

পঞ্চগড়- ২ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এবারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রী পরিষদ থেকে বাদ পড়েন।
তিনি গত নির্বাচনের পর রেলপথমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর রেলপথে নানামূখী উন্নয়ন সাধন করেন। যাত্রীদের সেবারমান বৃদ্ধিতে সকল ধরনের সুবিধায় নিয়ে আসেন রেল বিভাগকে। পাশাপাশি অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এমপি পঞ্চগড় সহ রেলের সকল স্তরে জবাবদিহিতার মনোভাব তৈরি করেন।

রেলের যাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রতিটি বগিতে সাধারন, এসি নন এসি ও শোভন চেয়ার সহ সব কিছুই ছিল পরিপাটি। এরপর রেলমন্ত্রী বদল হওয়ার পর পঞ্চগড়ে ট্রেনের বগি পরিবর্তন করে ১৮ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ বগি সংযোজিত করা হয়েছে । রেল বিভাগে খবর নিয়ে জানা গেছে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘতর রেলপথ বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। যা ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় রেলপথের দৈর্ঘ্য ৬৩৯ কিলোমিটার।ট্রেনযাত্রা আরামদায়ক নিরাপদ হওয়ায় দুটি জেলার মানুষের পছন্দের তালিকার প্রথমে রয়েছে রেলপথে চলাচল করা। যেমন ঠাকুরগাঁও ওপঞ্চগড়। তবে দিনাজপুরে প্রাচীণভাবেই মানুষ রেলের সাথে পরিচিত।এই ট্রেনটিতে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি আনা আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন ১২টি বগি নিয়ে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-ঢাকা পথে সরাসরি চলাচল করে আসছিল। এরপর অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন রেলপথ মন্ত্রীত্ব হারানোর পর পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও আন্ত ঃনগর ট্রেনগুলোতে সংযুক্ত করা হয়েছে ১৮ বছরের পুরোনো বগি।যাত্রীরা সাধারন জানান, উন্নত ও আধুনিক সৌন্দর্য্য বর্ধন ট্রেনটির বগি পরিবর্তন করে সংযোজন করা হয়েছে দীর্ঘদিনের পুরনো আর ভাঙ্গাচোরা বগি। বসতে গেলেই বড়ই বিড়ম্বনা। হাটু সিটে লেগে যায়। এসব বগি সংযোজিত করে রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে এক ধরনের প্রতারণা করছে। কারণ আগে তো কোন অভিযোগ ছিল না আমাদের। তারা অনতিবিলম্বে এসব বগি বদলানোর দাবি করে বলেন ‘না হলে যাত্রীরা ট্রেনে যাত্রা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। এতে ভঙ্গুর অবস্থা দেখা দিতে পারে এই রেলপথে।এই ট্রেনের বগি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে।ঠাকুরগাঁও রোড স্টেশন মাস্টার মো. আকতারুল বলেন, পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের যাত্রীরা এসে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আমাদের কিছু করার নেই। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতে এসব পরিবর্তন করা হয়েছে।তিনি আরো জানান, এর আগে ঠাকুরগাঁও থেকে যে সব রেলের বগিগুলো চলতো সেগুলোর বগি ছিল নতুন। বর্তমানে পুরাতন বগি দেওয়া হয়েছে। বগিগুলোর সিট ছোট হলেও সিট সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।পঞ্চগড়-ঢাকা রেলপথের যাত্রী মানিক বলেন‘ কি অবস্থা। এরকম কেনো হলো। আগের সিটগুলো তো অনেক ভালো ছিল। এখনকার সিটগুলো চাপা ও পুরনো। এটা করা তো ঠিক হয়নি। আমরা তো সেই কতোদিন ধরে এই পঞ্চগড় এক্্রপ্রেসে যাতায়াত করে আসছি।

 রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়া বলেন, আগে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ে চলাচল করা বগিগুলো চায়নার বডি ছিল। এসব বডি খুব তারাতারি নষ্ট হতো। তাই ওই বগিগুলোকে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানের ইন্ডিয়ান বগিগুলো রাজশাহীতে ছিল। সেগুলোকে পঞ্চগড়- ঠাকুরগাঁও এ সংযোজিত করা হয়েছে। কারন যা দীর্ঘ পথ চলাচল করলেও নষ্ট হয়না। তবে তিনি স্বীকার করে বলেছেন এসব ১৮ বছর আগের পুরানো বগি।তবে এ বিষয়ে পঞ্চগড় রেলওয়ের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত