৯ অনলাইন জুয়াড়ি আটকের মধ্যে মেহেরপুরের ৫ জন

  ইসমাইল হোসেন, জেলা প্রতিনিধি, মেহেরপুরঃ

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৪:১৮ |  আপডেট  : ১১ মে ২০২৪, ২৩:৩৭

৯ অনলাইন জুয়াড়ির আটকের মধ্যে মেহেরপুরের ৫ জন রয়েছে। দেশের কয়েকটি সীমান্তবর্তী জেলায় প্রতিদিন অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে অন্তত ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। 

তদন্ত সংস্থাটি জানিয়েছে, জুয়ার টাকা লেনদেন করতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা নিতো চক্রটি। এসব অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হতো বলেও ধারণা তাদের। রবিবার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ওয়ান এ· বেট বিডি ডটকম নামের এশটি বেটিং সাইডের সন্ধান পাই। সাইডটি রাশিয়া থেকে পরিচালিত হলেও বাংলাদেশে এর এজেন্ট রয়েছে। ৯ জন এজেন্টকে আটক করা হয়েছে। ১৩ নভেম্বর দেশের সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা থেকে তাদের আটক করা হয়। 

আটককৃতরা হলো মেহেরপুরের স্বপন মাহমুদ [২৭], নাজমুল হক [২১], আসলাম উদ্দিন [৩৫], মুরশিদ লিপু [২৫], চুয়াডাঙ্গার শিশির মোল্লা (২১) এবং ক·বাজারে আটক করা হয়েছে মাহফুজুর রহমান নবাব ও তার স্ত্রী মনিরা আক্তার মিলি (২৪), সহ সাদিক এবং মাসুদ রানা (২০) কে। এদের মধ্যে মাহফুজুর রহমান নবাব মেহেরপুর জেলার মূল নিয়ন্ত্রক। তার অধীনে অন্তত ১২ থেকে ১৩ জন এজেন্ট রয়েছে। 

সিআইডি কর্মকর্তা আরো বলেন, বেটিং সাইডের একজন এজেন্টের সিমে প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা এবং অপর একটি সিমে ১০ লক্ষ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। এ জেলায় এমন ৫০ জন এজেন্ট আছে। প্রতিদিনই ৩ থেকে ৫ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হচ্ছিল সেখানে। সারাদেশের চিত্র এখনও পাইনি। দিনে একটি বেটিং সাইডে এক থেকে দেড় লক্ষ ব্যক্তি জুয়ায় অংশ নিচ্ছে বলেও জানায় সিআইডি। যাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। চক্রটি বিভিন্ন টুর্নামেন্ট টার্গেট নিয়ে জুয়ার আয়োজন করে বলে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা, বেটিং সাইডটিতে একাউন্ট খুললে একটি ই-ওয়ালেট তৈরি হয়। তাতে একাউন্ট হোল্ডারকে টাকা লোড করতে হয়। বেটিং সাইডে দেওয়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নাম্বারে টাকা পাঠানোর পর তা ই-ওয়ালেটে যুক্ত হয়। ন্যুনতম ১ হাজার টাকা পাঠালে একাউন্টধারীকে পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। সেটা ব্যবহার করেই শুরু হয় জুয়া। 

কামরুল আহসান বলেন, জুয়ায় জড়িতরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিজনেস সিম পেয়ে যাচ্ছে। এমনকি এসব সিম ভাড়াও নিতো ওরা। বিজনেস বা এজেন্ট একাউন্টে লেনদেনে এখনও কোনও লিমিট নেই। এই সুযোগই নিচ্ছে চক্রটি। এ কারণে অবৈধ এসব কাজ বন্ধ করতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গেও কাজ করছে সিআইডি। 

আটককৃতদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, গোপন লেনদেনে তারা ম্যানেজমেন্ট ডক আইও নামের ওয়েবসাইট, টেলিগ্রাম ও রেড্ডি নামক কিছু এ্যাপস ব্যবহার করতো। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও অর্থ লেনদেনের তথ্য আদান-প্রদানে এ্যাপসগুলো ব্যবহার করতো তারা। এখন পর্যন্ত বেটিং সাইডটিতে ৬০ থেকে ৭০ জন এজেন্টের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি। তাদের মাধ্যমে অর্থপাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, আমরা কিছু একাউন্ট নাম্বার পেয়েছি। সেসব একাউন্টে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। একাউন্টে টাকা জমা করার পর আবার তোলা হয়েছে। এ টাকা তারা পাচার করেছে কোনোভাবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম, বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রেজাউল মাসুদ এবং অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত