১৭ বছরেও পিতা-পুত্রের নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার না পাওয়ায় স্বজনের আহাজারি

  প্রেস রিলিজ

প্রকাশ: ৫ জুলাই ২০২৩, ১৫:৪৮ |  আপডেট  : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:২৭

ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার মালিপাড়া গ্রামের একই পরিবারের পিতা-পুত্র নিমর্ম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ হত্যাকাণ্ডের সন্দেহের তীর এখন নিহত খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারের স্ত্রী সুলতানা পারভীনের দিকে। ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর অপ্রত্যাশিত হত্যার শিকার হন খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার। এর আগে ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার খোকসার নিজ বাড়িতে জবাই করে খন্দকার রবিউজ্জামানের পিতা রোকন উদ্দিন জামান লক্ষনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পিতা-পুত্রের হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাথা বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। খন্দকার রবিউজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তার স্ত্রীর সন্দেহজনক আচরণ এ হত্যাকাণ্ডকে আরো রহস্যময় করে তোলেছে। এলাকাবাসীর সন্দেহ এ উভয় হত্যাকান্ডের সাথে মরহুম রবিউজ্জামানের স্ত্রী সুলতানা পারভীন সরাসরি জড়িত।

এ হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিতে গিয়ে কান্নাজরিত কন্ঠে পরিবারের সদস্যরা ও এর এলাকার লোকেরা জানান, শৈলকুপা থানার মালিপাড়া গ্রামের মরহুম রোকন উদ্দিন লক্ষনের মেঝো পুত্র খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঠিকাদার ছিলেন। ঘটনাক্রমে বিগত ২০০২ সালে একই উপজেলার বড়দা গ্রামের আক্কাস আলীর কন্যা মোছাঃ সুলতানা পারভীনের সঙ্গে পারিবারিক সিদ্ধান্তে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহের এক বছর যেতে না যেতে তাদের পরিবারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে ওই কন্যার বয়স ১৭ বছর। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এলাকার চরমপন্থী অলিআরের সাথে নিহত রবিউজ্জামানের স্ত্রীর দৈহিক সম্পর্ক ছাড়াও নানাবিধ সম্পর্ক ছিল। স্ত্রীর এহেন চরিত্রের কারণে রবিউজ্জামান প্রায় হতাশ ছিলেন। তিনি স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে তার স্ত্রী লোকজন নিয়ে স্বামীর পরিবারে ক্ষমা চেয়ে সংসারে টিকে যান। কিন্তু ছলনাময়ী স্ত্রী এই সুযোগে স্বামী হত্যার সকল নীল নক্সা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তিনি তার স্বামীকে হত্যা করেই নীল নক্সার সফল বাস্তবায়ন করেন। পথের কাটা সরিয়ে দিয়ে নীল নক্সা অনুযায়ী তার পূর্বের প্রেমিকাকে বিবাহ করেন। মরহুমের পরিবার সন্দেহ করছেন, রবিউজ্জামানের ঔরষজাত কন্যাকে যে কোন সময় হত্যা করা হতে পারে। তাই আইনত রবিউজ্জামানের কন্যাকে তার চাচাদের হাতে তুলে দিতে পরিবারের সদস্যরা সরকার ও আদালতের প্রতি আহ্বান জানান। মরহুমের পরিবার আশঙ্কা প্রকাশ করছে, গ্রেপ্তার এড়াতে খুনি সুলতানা তার বর্তমান স্বামীর সাথে যে কোন সময় দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এলাকাবাসীর ধারণা মরহুমের স্ত্রী সুলতানা পারভীনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। বিবাহের পর খন্দকার রবিউজ্জামানের সাথে স্ত্রী সুলতানা পারভীনের দাম্পত্য জীবন নানা কারণে দুরত্বের সৃষ্টি হয়। এ কারণে পরিবারের অভিভাবক মাতা খন্দকার আঞ্জুমান আরা বেগম ছেলে এবং ছেলের বৌকে পৃথক করে দেন। এরপর একই বাড়ীতে স্বামী-স্ত্রী পৃথকভাবে সংসার শুরু করেন। ওই পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, বিগত ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে সুলতানা পারভীন হঠাৎ চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘তার স্বামী-খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার মারা গেছে'। পরে বাড়ীর লোকজনসহ প্রতিবেশীরা সুলতানার চিৎকারে জড় হয়ে খন্দকার রুবিউজ্জামান সিপারকে মৃত দেখতে পায়। রবিউজ্জামানের লাশ দেখে পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে যায়। তার আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা নির্বাক হয়ে যায়। তার মৃত্যুকে পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। তখন থেকেই এ মৃত্যু নিয়ে পরিবারসহ এলাকাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যাইহোক, পরের দিন ২৮ ডিসেম্বর শৈলকুপা শাহী মসজিদের সামনে জানাজার পর রবিউজ্জামানকে শাহি মসজিদের কবরস্থানে কবরস্থ করা হয়। এরপর বাড়ীর লোকজন ফাইলপত্র খুঁজতে গিয়ে নিহত রবিউজ্জামানের করা ২টি জিডির ফটোকপি দেখতে পান এবং এর সূত্র ধরে তার স্ত্রীকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। পরে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারের লাশ কবর থেকে তুলে ৭০ দিন পর পোষ্টমর্টেম করার পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। খন্দকার রবিউজ্জমানের দায়ের করা ওই সব জিডিতে উল্লেখ ছিল, আমার স্ত্রী যে কোন সময় আমার টাকা পয়সা ও অর্থ সম্পদ আত্মসাতের জন্য যে কোনো সময় আমাকে হত্যা করতে পারে। এসব জিডি নং-৬৮৯, তাং ০৯/০৫/২০০৩ইং এবং-১০৩৩, তাং-২৭/০৯/২০০৫। এ ঘটনায় মরহুমের পরিবারের সকলে হতবাক হয়ে যান। পরে রবিউজ্জামানের মাতা খন্দকার আঞ্জুমান আরা বেগম শৈলকুপা থানায় আরো একটি জিডি করেন, যার নং-১০৫২, তাং ২৯/০৩/২০০৮।

মরহুমের পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, সুলতানা পারভীনই তার স্বামী রবিউজ্জামানকে হত্যা করেছে। এ ছাড়াও মরহুমকে গোসলের সময় তার একটি অন্ডকোষে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এলাকাবাসীর ধারণা, মরহুমের স্ত্রী সুলতানা পারভীন তার ছোট ভাই মিল্টনের সহযোগিতায় এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এলাকাবাসী এ প্রতিনিধিকে আরো জানান, সুলতানার সাথে একই গ্রামের জনৈক যুবকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল এবং এই কারণে তাদের দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরে। পারিবারিক সূত্র থেকে আরো জানা যায়, সুলতানা পারভীন একদিন তার শ্বাশুড়ীকে হুমকি দিয়ে বলে ছিল, তুমি বেশী বাড়াবাড়ি করলে তোমার ছেলেকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেব। এ সময় সুলতানা পারভীনের এমন হুমকি আমলে নেয়নি রবিউজ্জামানের মাতা এবং পরিবারের অন্যান্যরা। পরিবারের সদস্যরা জানান, মরহুমের স্ত্রী চলে যাবার সময় ৩০ লাখেরও বেশী টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, যেদিন রবিউজ্জামানের মৃত্যু হয় সে দিন ওই পরিবারের কেউ বাড়ীতে ছিলেন না। মাতা খন্দকার আঞ্জুমান আরা বেগম অসুস্থ্যতার কারণে ওই সময় ঢাকায় ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নিহত রবিউজ্জামানের ছোট ভাই জানান, আমার ভাইয়ের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। এটি অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায়, সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে আলাপকালে মরহুমের ছোট ভাই বিশিষ্ট সাংবাদিক খন্দকার মাসুদ বলেন, আমরা প্রথম অবস্থায় এই মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিলেও পরে ভাইয়ের রক্ষিত জিডির পর দেখে এ মৃত্যুকে অতি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই আমরা মনে করছি। পরিবারের অভিযোগ শৈলকুপা থানার এস আই তৌহিদুল ইসলাম বিপুল পরিমান উৎকোচের বিনিময়ে এই হত্যা মামলার মিথ্যা রিপোর্ট পেশ করেন। এছাড়াও রবিউজ্জামানের মৃত্যুর শোক কাটতে না কাটতেই তার স্ত্রী সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় জমির ফসল ও ফলজ বৃক্ষসহ ৩.৫ একর জমির একটি নার্সারির সমুদয় চারা লুট-পাট করে নিয়ে যায়। এসব গাছ এবং চারার মূল্য ২ কোটি টাকারও বেশি হবে বলে মরহুমের পরিবার জানায়। নিহতের ভাই আরো বলেন, ‘অর্থ ও সম্পত্তির জন্যই ভাবী সুলতানা পারভীন আমার ভাইকে হত্যা করেছে। তাদের পরিবার এলাকায় একটি সন্ত্রাসী পরিবার হিসেবে পরিচিত এবং লোভীও বটে। সুলতানা পারভীন আমার ভাইয়ের সাথে কারণে-অকারণে প্রায়ই ঝগড়া করতেন। ভাবী ভাইকে পূর্বে বহুবার হুমকি-ধামকি দিয়েছেন, কিন্ত আমরা তা আমলে নেইনি। বুঝতে পারিনি, তিনি হত্যার মধ্য দিয়ে তার প্রতিশোধ নেবেন। ' খন্দকার মাসুদ-উজ-জামান বলেন, ‘রবিউজ্জামানের মৃত্যুর পর লাশের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং আমরা মনে করি, আমার ভাইকে নগদ অর্থ, সম্পত্তির লোভ ও পরকীয়ার কারনেই নির্মম হত্যার শিকার হতে হয়েছে এবং ভাবীই আমার ভাইয়ের প্রকৃত হত্যাকারী। রবিউজ্জামানের স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং হত্যাকাণ্ড বলে মনে করছেন মাসুদ-উজ-জামানের পরিবারসহ এলাকাবাসীও। তারা এ হত্যাকাণ্ডের পুনঃ তদন্ত করে খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। মরহুমের পারিবারিক সূত্রে আরো জানা যায়, খুন হওয়া খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার হত্যাকাণ্ডে তারই মায়ের হাট ফাদিলপুর মাতুনালয়ের ২৮ বিঘা সম্পত্তির কারণও হতে পারে। কারণ ইতিপূর্বে আপন নানা মরহুম খন্দকার রওশন আলী আত্মহত্যা করেছিলেন বলে যে ঘটনার প্রকাশ পেয়েছিল, সিপার হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্দেহ হয় যে, সেটা আত্মহত্যা ছিল না বরং তাকেও পরিকল্পিতভাবে ফাঁস দিয়ে ঝুলিয় মারা হয়েছিল।  যেহেতু আমার নানা মাকে কিছু সম্পত্তি দিয়েছিল। মৃত্যুর কয়েকমাস আগে ফেনীতে একটা ঠিকাদারী কাজ নিয়েছিল। কিন্তু সেই কাজের টাকার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। সেটাও মৃত্যুর একটা কারণ হতে পারে।

উল্লেখ্য যে, ফেনীতে জয়নাল হাজারীর পালিত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তার কাছ থেকে জোরপূবর্ক একটা ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই করিয়ে নেয়। এছাড়াও, ঝিনাইদহের পাগলা কানাই এলাকার কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারকে আটকিয়ে রেখে তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেয়। এলাকার সচেতন মানুষেরা মনে করেন এ সকল বিষয়গুলো পুলিশ বা র‌্যাব কর্তৃক সুষ্ঠু তদন্ত হলেই হত্যার প্রকৃত রহস্য বেড়িয়ে আসবে। জানা যায়, রবিউজ্জামান সিপার এলাকায় খুবই মৃদুভাষী এবং সৎ চরিত্রের ছিলেন। তিনি পরিশ্রমী, ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, মানবাধিকার কর্মী, অন্যায়ের প্ৰতিবাদী ছিলেন। খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার মেজর জেনারেল মজিদ-উল হকের হাত ধরে জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেন জাগদল থেকে। এরপরে তিনি এক সময় শৈলকুপা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার মেজর জেনারেল মজিদ উল হক ও মোহাম্মদ উদ্দিন আহম্মেদ ছনু মাঝমাদার গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। অন্যদিকে শৈলকূপার সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব তাদের পাল্টা গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন। তখন থেকেই খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ও আব্দুল ওহাবের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ছিলেন জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) একনিষ্ঠ নেতা। তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও তিনি ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মাজমাদারের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। তিনি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও, খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার ও তার ছোট ভাই খন্দকার মাসুদ-উজ-জামান এলজিইডির একটি ঠিকাদারী কাজে টেন্ডার ড্রপ করতে গেলে সন্ত্রাসী ছাত্রদল নামধারী ওহাবের ভাতিজা সাহেব আলী ও সাজ্জাদের নেতৃর্তে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাদের টেন্ডার ড্রপ করতে বাঁধা দেয়। এ সময় তারা ইউএনও'র কক্ষে তাদের ওপর আক্রমণ করে । পরে তাদের অপহরণ করে শৈলকূপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে খবর পেয়ে শৈলকূপা থানার পুলিশ গিয়ে তাদের দু'ভাইকে উদ্ধার করেন। পরে শৈলকুপা পৌরসভার সকল মসজিদে তাদের দু'ভাইকে জীবিত ফিরে পাওয়ায় মেজর জেনারেল মজিদ উল হক ও মোহাম্মদ উদ্দিন আহম্মেদ ছনু মাঝমাদার গ্রুপের পক্ষ থেকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওহাব গংদের ক্রমাগত হুমকির কারণে সাংবাদিক পরিবারটি এখন বাড়ি- ঘর ছাড়া। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির কৃষি, সেচ ও পানিসম্পদ মন্ত্রী মেজর জেনারেল মজিদ উল হককে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য শৈলকূপায় আমন্ত্ৰণ জানান মরহুম মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মাজমাদার ও রবিউজ্জামান সিপারের নেতৃত্বাধীন অংশ। এ জন্য এলাকায় বেশ কয়েকটি তোরণ নির্মান করা হয়। পরে রাতের আধাঁরে সন্ত্রাসী দিয়ে ওই তোরণগুলো ভেঙ্গে দেন তৎকালীন এমপি আব্দুল ওহাবের সাঙ্গপাঙ্গরা। বিষয়টি নিয়ে ওই সময় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তখন থেকেই দলে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি সামনে চলে আসে। ওহাব বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে খন্দকার রবিউজ্জামান সিপারসহ তার অনুসারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। বর্তমানে মেজর জেনারেল মজিদ উল হক, মোহাম্মদ উদ্দিন আহমেদ ছুনু মাজমাদার ও খন্দকার রবিউজ্জামান সিপার বিএনপির এই তিন নেতা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এলাকায় তাদের গ্রুপের রেশ রয়ে গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সুলতানা পারভীনের সাথে শৈলকুপার জমশেদপুরের মোহাম্মদ বাসীর ছেলে সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী নেতা ওলিয়ারের সাথে তার গোপন সম্পর্ক ছিল। মরহুমের পরিবার জানায়, একই এলাকার সন্ত্রাসী এলিট ও তার দলবল নিয়ে আমাদের জমাজমি জোড় করে দখলে রেখেছে এবং পরিবারের অন্যান্যদেরকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তারা যে কোন সময় পরিবারের যে কাউকে হত্যা বা গুম করতে পারে। সন্ত্রাসী খন্দকার এলিটের এক ভাই পুলিশের সিআইডিতে কর্মরত থাকায় সন্ত্রাসী খন্দকার এলিট বলে বেড়াচ্ছেন, 'এমপি-মন্ত্রী, চেয়ারম্যান-মেম্বার, এসপি-ডিসি সবাই আমার হাতের মুঠোয়, তোরা আমাদের কিছুই করতে পারবি না। ' সন্ত্রাসী খন্দকার এলিট সব সময় ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের সাথে সম্পর্ক রাখেন এবং যে যখন এমপি-মন্ত্রী, চেয়ারম্যান-মেম্বার হন তাদের সাথে অর্থের বিনিময়ে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এছাড়াও সন্ত্রাসী খন্দকার এলিট স্থানীয় পাইলেট কসাই, কোহিত কসাই, নাবলা কসাই, শাহিন কসাই, কায়েম কসাই, সাবুদ্দিন কসাই, খাইরুল কসাই, দরবেশ কসাই, হান্নান কসাই, মোনহর কসাই, নুরু মিন্ত্রী, মজনু, দিয়ানত,রাহেন, শফি ১, মনিমিয়া, মীর জাহাঙ্গীর, রকিব, শহিদুল ড্রাইভার, ফরিদ দর্জি, বাদসা দর্জি, ইয়ার উদ্দিন খেরু, মন্টু, ইছাহাক কশাই, হাকিম, হোসেন, সালামত, বুলবুল, লিটন কশাই, দুল্লাপ কশাই, উজ্জ্বল, মজিদ মহুরী, পল্টল, ইলিয়াস, মাজেদ, সরোয়ার, দিদার, আবুসায়েদ, নেকবর গং, খয়বর, ইব্রা, রাজ্জাক, সবেত, জবেত, মহিদ মাস্টার, দুলাল মেম্বার, বাদসা, বাকিবিল্লা, হাশেম, খোকন, জিকুল, আফান কসাই, জাফর, আরমান, মতলেব, কোরবান, সাবেক পৌর মেয়র খলিলুর রহমান, ভোলা কসাই, সেকেন কসাই, জালে মতিন, চুন্টী কসাই, ফিরোজ বড়, এটি এম বাবু, সাবেক কমিশনার আজিজ, রাজ্জাক, মোঃ শহিদুল, সাবেক ছাত্রনেতা সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, আনিস, বাবলু মাষ্টার, ফজলু মাষ্টার, মিল্টন কসাই, সাহেব আলী ১, ছাত্রনেতা নামধারী সন্ত্রাসী আকুল, ফিরোজ, রাকিব, বিশু, হেকমত বিশ্বাস, পান্না মীর, গোলাম মোস্তফা, সাবেক চেয়ারম্যান টুলু, সাহেব আলী ২, উকিল মোল্যা, সিদ্দিক মোল্যা, তোবারেক মোল্যা, এমদাদ ডাক্তার, আনসার শেখ, শফি, মাসুদ ওরফে মাহি, জাবের পুলিশ সিআইডি, রত্মা, বেল্লাল কেশিয়ার, আবিদুল, মতিয়ার, মোজাম্মেল, আক্তার কসাই, তৈয়বুর রহমান খান, আলমগীর ও আমজাদ, ৮জন মহিলাসহ আরো অনেকের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। এদের দ্বারা এমন কোন জঘন্য কাজ নেই যা তাদের দ্বারা অসম্ভব। মরহুমের পরিবার খুনী এবং তার সহযোগিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত