১২ ডিসেম্বর আদমদীঘি হানাদার মুক্ত দিবস

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:০১ |  আপডেট  : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:২৯

১২ ডিসেম্বর আদমদীঘি হানাদার মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালে  দীর্ঘ ৯ মাস পাক হানাদারের সাথে গেরিলা যুেদ্ধ করে তাদের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বগুড়ার আদমদীঘি থানা সদরকে পাকিস্তানের হানাদার মুক্ত করেন। তৎসময়ে উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন এলাকায় ছিল পাক হানাদারদের দখলে ও শক্ত ঘাঁটি সেই ঘাঁটি থেকে পাক হানাদাররা  উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রন করে থাকতেন। ১৯৭১ সালে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলার গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে প্রতিটি ঘরে ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা, নারী ধর্ষন, করেছিল পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী। তাদের অন্যায় অত্যাচারে বাঙ্গালীর জীবনে নেমে এসেছিল কালো মেঘ। দেশকে নিজেকে মা বোনদের ইজ্জত বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের পরোয়া না করে ঝাপিয়ে পড়ে শক্রর উপর শুরু করে গেরিলা হামলা। ১১ ডিসেম্বর রাতের শুরু থেকে হানাদার বাহিনী উপর মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমন চালাতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে পাক হানাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে কোন কুল কিনারা না পেয়ে ১২ ডিসেম্বর ভোর হতেই রেললাইনের পাশ দিয়ে পালিয়ে যায়।  

এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা ১২ ডিসেম্বরে দিনে শক্রমুক্ত করে বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে আদমদীঘি সদরকে হানাদার মুক্ত করেন। যুদ্ধ চলাকালীন কোন বাঙ্গালীকে সান্তাহার শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পাকিস্তানী মিলিটারী পাশাপাশি রাজাকার আলবদর ও অবাঙ্গালী বিহারীদের অন্যায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল বাঙ্গালী। আদমদীঘি থানা হানাদারমুক্ত হওয়ার মাত্র দুই দিন পর ১৪ ডিসেম্বর বুহৎ সান্তাহার রেলওয়ে জংশন এলাকা জুড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে নিরুপায় হয়ে হানাদার বাহিনীরা নিজেকে রক্ষা করতে  সান্তাহার শহর ছেড়ে নওগাঁর দিকে পালিয়ে গেলে ১৪ ডিসেম্বরে সান্তাহার  হানাদার মুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালিন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন এল কে আবুল, আমজাদ হোসেন আব্বাস আলী, মেজর হাকিম, মুনছুর রহমান সহ আরো অনেক। বিশ্রাম নেওয়ার সময় ছোট আখিড়া গ্রামের কাছ থেকে আলতাফ হোসেন ও আব্দুল জলিল এবং চাঁপাপুর এলাকা থেকে আনোয়ারুল হক টুলু, আব্দুস সাত্তারকে আটক করে নিয়ে আসে থানায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পূর্বে পাক হানাদার বাহিনীরা  নির্মম নির্যাতন চালানোর পর এই চার মুক্তিযোদ্ধাকে আদমদীঘির ব্রীজ সংলগ্ন শ্মশানঘাঁটি নামক স্থানে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে চোখ না বেধে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। স¤প্রতি ১৯৯৬ সালে  শহীদ ৪ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরনে ফলক তৈরী করা হয়। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত