যাতায়তে সাঁকোই ভরসা, কাউনিয়ায় ৫৩ বছর কেটে গেল কেউ কথা রাখে নি

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১৭:০৭ | আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ২০:৪৭

কাউনিয়ার হারাগাছ ইউনিয়নের পূর্ব নাজিরদহ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মরা তিস্তা নদীর উপরে সেতু না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করছে ৫গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। বর্ষা কালে ছোট নৌকায় নদী পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে কয়েকবার। দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতু নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। প্রায় ১৫ বছর আগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় যাতায়াতের জন্য তৈরি করেন বাশেঁর সাঁকো। সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে এলাকার লোকজন একত্রিত হয়ে বাঁশ-কাঠ ও অর্থ সংগ্রহ করে মেরামত করে যাতায়াতের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সাঁকোটি অতি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে প্রতিবছরই মেরামত করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হারাগাছের চরাঞ্চলের ৫ গ্রামের মানুষের দুঃখ মরা তিস্তার শাখা নদীটি। হারাগাছ পৌরসভাসহ ৪ ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে তিস্তা রেল সেতু পয়েন্টে গিয়ে মিলিত হয়েছে মরা তিস্তা শাখা নদীটি। নৌকা আর বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর ভরসা। ভোটের আগে জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি বলছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা মোশারফ ও গাজিয়ার জানান, কথা দিয়ে কেউ কথা রাখে না। নদীর ওপারে ২টি বাজার, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি মাদ্রসা রয়েছে। সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষ ও স্কুল পড়ুয়া শিশুদের যাতায়তে চরম বিপাকে পরতে হয়। খলিলুর রহমান জানান, সেতু না থাকায় পাশর্^বর্তী চিনাতুলি, ঠিকানার হাট, পূর্ব নাজিরদহ, বল্লভবিষ্ণু গ্রামের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়তে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ গ্রাম গুলোতে আলু, ভুট্রা, ধান, পাট, গম, মরিচ, বাদামসহ নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিতে হলে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয় অথচ পূর্ব নাজিরদহ ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ হলে অর্ধেক পথ কমে আসবে, সেই সাথে এলাকার কৃষকরা পাবে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য। পূর্ব নাজিরদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ রাজ্জাক লাল জানান, সেতু না থাকায় স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার করতে হয়। বিদ্যালয়গামী ছাত্র- ছাত্রীরা জানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে যেতে তাদের খুব কষ্ট হয়। সবাই বলে নতুন সাঁকো হবে কিন্তু হয় না! আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না। হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ জানান, সাঁকোটি পরিষদের বরাদ্দ থেকে সংস্কার করা হয়েছে। পাকা সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদে মাসিক মিটিং এ বহুবার বলেছি। আশা করছি নতুন সরকার আসলে পাকা সেতু হবে। পাকা সেতু হলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এর সুফল পাবেন। উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান বিষয়টি সরেজমিনে দেখে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠান হবে। এলাকাবাসী এর দ্রুত সমাধান চায়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত