স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ইউরো কাপের ফাইনালে ইতালি

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২১, ০৯:২১ |  আপডেট  : ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১

পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখালেও শেষ পর্যন্ত ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরে ইউরো কাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল স্পেন। আর আসরে শতভাগ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফাইনালে পা রাখলো আজ্জুরিরা।


ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে মঙ্গলবার ওয়েম্বলিতে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতায় শেষ হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে ৪-২ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় ইতালি। এই নিয়ে টানা ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত রইলো ইতালিয়ানরা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা হারতে ভুলে গেছে। এবারের ইউরোয় এখন পর্যন্ত ৩টি নকআউট ম্যাচসহ ৬ ম্যাচে জিতেছে ইতালি।

টাইব্রেকারের শুরুতেই ইতালির লোকাতেল্লি ও স্পেনের ওলমো দুজনেই শট মিস করেন। এরপর ইতালির বেলোত্তি ও বনুচ্চি এবং স্পেনের মোরেনো ও আলকান্তারা বল জালে জড়াতে সক্ষম হন। ইতালির বার্নারদেসচিও পান জালের দেখা। কিন্তু মিস করেন স্পেনের মোরাতা। এরপর ইতালির জর্গিনহো লক্ষ্যভেদ করলে আর শট নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।

২০১৬ ইউরোয় এই স্পেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় করেছিল ইতালি।  

আগের ম্যাচের একাদশে বেশকিছু পরিবর্তন নিয়ে মাঠে স্পেন ও ইতালি। স্পিনাজ্জোলাকে বসিয়ে এমারসনকে নামান ইতালিয়ান কোচ রবার্তো মানচিনি। স্পেন রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠায় পাউ তোরেস ও মোরাতাকে। সারাবিয়াকে বাইরে রাখা হয়। স্পেন কোচ লুইস এনরিকে মাঠে নামান গার্সিয়া, ওলমো ও মিকেলকে।

খেলার শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আসরে শতভাগ জয়ের রেকর্ড সঙ্গী করে মাঠে নামা ইতালি। কিন্তু ভেস্তে যায় তাদের আক্রমণ। বারেল্লার শট পোস্টে প্রতিহত হওয়ার পর অফসাইডের সিদ্ধান্ত আসে। পঞ্চম মিনিটে ফের একবার ইতালির আক্রমণ থমকে যায় ইমোবিল অফসাইডের ফাঁদে পড়ায়।

শুরুতেই দুই সুযোগ নষ্ট করা ইতালির হাত থেকে এরপর খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয় স্পেন। নিজেদের স্বাভাবিক খেলা তথা বল দখলের দিকেই সব মনোযোগ দেয় স্পেন। এর মধ্যেই ১৫তম মিনিটে ফেরান তোরেস ইতালির জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে তা লক্ষ্যে ছিল না।  

২৫তম মিনিটে দানি ওলমোর শট প্রতিহত করেন ইতালির গোলরক্ষক দোনারুমা। ৮ মিনিট পর ফের ইতালির পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ওলমা, কিন্তু বল ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।  

প্রথমার্ধে প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ সময় বল দখলে রাখে স্পেন। কিন্তু এতে কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। আবার ইতালিও বল দখলে না রাখতে পারায় ভালো আক্রমণ শানাতে পারেনি। যদিও বিরতির ঠিক আগে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া হয় আজ্জুরিদের। এমারসনের শট ক্রসবারে প্রতিহত হয়।  

প্রথমার্ধের বিরতিতে ম্যাচ গোলশূন্য থাকে। তবে এই অর্ধে ইতালির চেয়ে স্পেনই বেশি দাপট দেখিয়েছে। আসলে পুরো আসরে এই প্রথমবার সত্যিকারের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ইতালিয়ানরা।

দ্বিতীয়ার্ধে ইতালি স্পেনের জমাট রক্ষণে হামলা দিতে শুরু করে। এর ফল আসে ৬০তম মিনিটে। মিকেলের আক্রমণ প্রতিহত করে সঙ্গে সঙ্গে কাউন্টার অ্যাটাকের জন্য বল পাঠান দোনারুমা। বল নিয়ে ছুটে স্পেনের রক্ষণব্যূহ ভেঙে ঢুকে পড়েন ইমোবিল এবং খুঁজে নেন চিয়েসাকে। এরপর বাঁকা শটে স্প্যানিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান ইতালিয়ান স্ট্রাইকার।  

গোল হজমের পর স্পেনও বল দখলের চেয়ে আক্রমণের দিকে মনোযোগ দেয়। এ লক্ষ্যে মিডফিল্ডার তোরেসকে তুলে নিয়ে স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতাকে নামান এনরিকে। কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়ে তিনি সমতা ফেরান ২০ মিনিট পরেই। প্রথমে লাপোর্তার কাছ থেকে বল পেয়ে দৌড়ে বক্সের দিকে ছুটে যান, এরপর ওলমোর সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে ইতালির রক্ষণ ভেঙে দোনারুমাকে পাশ কাটিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন এই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।

এই নিয়ে ইউরোয় স্পেনের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের (৬) রেকর্ড গড়লেন মোরাতা। তিনি পিছনে ফেলে দিলেন সাবেক স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ফার্নান্দো তোরেসকে (৫)। মোরাতার ওই গোলের পর নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও যোগ করা সময় পর্যন্ত খেলায় সমতা বিরাজ করে। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।  

অতিরিক্ত সময়ের শুরুর দিকে পেদ্রির দারুণ ক্রস ডি-বক্সের মধ্যে থাকা মোরাতার দিকে যাওয়ার পথে ঘুষি দিয়ে প্রতিহত করেন দোনারুমা। এর কয়েক মিনিট পর ওলমোর শট ঠেকিয়ে দেন ইতালির গোলরক্ষক। ১১০তম মিনিটে ইতালির বেরারদি স্পেনের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেছিলেন। কিন্তু অফসাইডের আওতায় পড়েন তিনি। অতিরিক্ত সময় শেষেও ম্যাচে সমতা থাকায় পেনাল্টি শুট-আউটে নির্ধারিত হয় দুই দলের ভাগ্য। যেখানে জয় হয় ইতালির।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত