পঞ্চগড়ে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৯:৩০ | আপডেট : ৪ জুন ২০২৫, ০৯:২৫

পঞ্চগড়ে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে সফিকুল ইসলাম (৪৬) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ কামরুজ্জামান এই দ-াদেশ প্রদান করেন। তবে অপর ১০ জন আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। দ-প্রাপ্ত সফিকুল ইসলাম জেলার বোদা উপজেলার কাজলদিঘী তরঙ্গীপাড়া এলাকার হামেদ আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ঘটনার ১৬/১৭ বছর আগে সফিকুল ইসলামের সাথে একই এলাকার আব্দুল মান্নানের মেয়ে মমতাজ বেগমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান হয়। কিন্তু স্বামী সফিকুল প্রতিবেশি এক নারীর সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। বিষয়টি নিয়ে একাধিক শালিস হলেও মমতাজের উপর চলতে থাকে নির্যাতন। কারণে অকারণে তাকে মারধর করতো স্বামী সফিকুল। তাকে তার পরিবারের লোকজনও সহযোগিতা করতো। ২০১৫ সালের ৮ জুলাই রাতে তাদের মধ্যে আবারো ঝগড়া হয়। এ সময় মমতাজকে হত্যার হুমকিও দেয় তার স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। ৯ জুলাই ভোরে নিজ ঘরে মমতাজের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং বোদা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
১৪ জুলাই ১১ জনকে আসামী করে আদালতে হত্যা মামলা করে নিহত গৃহবধূ মমতাজের বাবা আব্দুল মান্নান। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া, সাক্ষীদের সাক্ষগ্রহণ শেষে প্রায় ১০ বছর বিচারকাজ চলার পর সোমবার আদালত এই রায় প্রদান করেন।
পঞ্চগড় আদালতের অতিরিক্ত পিপি ইয়াসিনুল হক দুলাল বলেন, ভিকটিমের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাকে শ^াসরোধে হত্যার কথা বলা হয়েছে। আমরা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই আদালত ১ নম্বর আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অন্য আসামীদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আসামীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত