স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৫০ |  আপডেট  : ৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৮

পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ, ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় থাকা ১৮টি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফ্ল্যাট বাদে নাফিজ সরাফত ও আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে থাকা জমিসহ বাড়ি, প্লটও ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) এ আদেশ দেন। এদিন দুদেকর পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত তাদের এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে নাফিজ সরাফাতের নামে গুলশানের ২০ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি, গুলশানের একটি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট বাজারের চারটি, নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকায় একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জের দুটি প্লট, বাড্ডার কাঠালদিয়ার আড়াই কাটা, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের দুই ১০ কাঠা করে ২০ কাঠা, গাজীপুর সদরে ৮. ২৫ শতাংশ জমি, নিকুঞ্জরের জোয়ার সাহারায় ৪.৯৫ শতাংশ জমি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউক পূর্বাচল প্লটে সাড়ে ৭ কাঠা জমি রয়েছে।

আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা বাড়িসহ জমি, পান্থপথে একটি, গুলশান লিংক রোডে একটি, মিরপুর ডিওএইচএস এ একটি, শাহজাদপুরে একটি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটের ৫০ শতাংশ, নিকুঞ্জে তিন কাঠা জমি, বাড্ডার কাঠালদিয়া আড়াই কাঠা নাল জমি ও গাজীপুর সদরে ৮.২৫ শতাংশ চালা জমি রয়েছে।

রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের নামে বনানীতে থাকা তিনটি ও বারিধারায় থাকা চারটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের অনুসন্ধান টিমের প্রধান কমিশনের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সরাফত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগের ওপর অনুসন্ধান চলমান। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং তার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে ও তারা পলাতক রয়েছেন। 

প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তিসমূহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ তথা দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত/বৈধ আয় বহির্ভূতভাবে অর্জন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সঙ্গে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবিলম্বে ক্রোক করা আবশ্যক।

 

সা/ই

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত