সিরাজদিখানে আলু চাষীদের মাথায় হাত 

  সিরাজদিখান(মুন্সীগঞ্জ)প্রতিনিধি: 

প্রকাশ: ৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:৫২ |  আপডেট  : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১০

দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী অ ল হিসেবে খ্যাত মুন্সীগঞ্জের সিরাজিখানে কৃষকদের চোখে এখন কষ্টের পানি। চলছে আলু রোপণের ভরা মৌসুম। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকদের ছিল কর্মব্যস্ততা। আশা ছিল গত বছরের লোকসান এবারের ভালো ফলনে পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু সে আশায় গুড়ে বালি। গত ৩ দিনের টানা বৃষ্টিতে সিরাজদিখান উপজেলার আলু ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ১০ হাজার আলু চাষী এখন বিপদগ্রস্থ টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। লগ্নি করে এবং সুদে টাকা এনে আলু ফসল রোপণ করেছেন অনেক কৃষকরা। সেই আলু এখন কৃষকের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাষিরা বলছেন, গত এক সপ্তাহর মধ্যে যারা আলুর বীজ রোপণ করেছিল তারা বেশ ক্ষতির আশংঙ্খায় রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৩০০শ ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে  আলু রোপণ করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়েছে । 

সরেজমিন  গতকাল মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা গেছে উপজেলার বেশীরবাগ জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে । এখনো বৃষ্টি হচ্ছে । বৃষ্টি থামলে  কৃষকরা তাদের আলু জমি থেকে পানি সেচের মেশিন লাগিয়ে   জমির পানি নিষ্কাশন করবে ।  

উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া গ্রামের আলু চাষী আলী হোসেন ঢালী বলেন  ‘এবার আমি সাড়ে ৭ হেক্টর জমিতে  আলুর বীজ লাগিয়েছি। সার, শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ খরচসহ প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।বৃষ্টির পানিতে আমার সব জমিই জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হয়েছে। লাভের আশায় লগ্নি করে এবং আত্নীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার এনে আলু চাষ করেছিলাম বৃষ্টি আমার সব কিছু শেষ করে দিল ।’ 

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বীজ আলুর দাম তুলনামূলকভাবে কম ছিল, এখন আবার নতুন করে বীজ দরকার হওয়ায় তার দাম বৃদ্ধিসহ প্রাপ্তি সমস্যা হবে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, কয়েক দিনের থেমে থেমে আসা বৃষ্টিপাতে অধিকাংশ আলু জমিতে পানি জমেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। আমরা কৃষকদের পূর্বাভাস দেয়ার পরও তারা আলু বীজ রোপণ করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  কৃষিবিদ রোজিনা আক্তার  জানান,‘নিন্ম চাপ এবং অসময়ে বৃষ্টির কারনে সিরাজদিখানে আলু চাষীদের ক্ষতি হয়েছে তবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিরাজদিখানে আলু বপন শুরু হয়েছিল । যে সকল জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে সেই জমিতে ক্ষতি হওয়ার পরিমান কম আর যে সকল জমিতে সপ্তাহখানের মধ্যে লাগিয়েছে তাদের ক্ষতির পরিমান বেশী । তাছাড়া  তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের অনেক লোক কাজ করছে । 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত