সমন্বিত সবজি চাষে প্রবাস ফেরত যুবকের সফলতা

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২২, ২০:৩৩ |  আপডেট  : ১২ মে ২০২৪, ১৮:৪৫

বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বেনেগাতি গ্রামের আব্দুল আজিজ টিটু ভাগ্য বদলের আশায় মালয়শিয়া যান। ২০০৯ সালে মালয়শিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করে সুবিধা করতে পারেননি। দুই বছর পরে ২০১১ সালে নিজের জমিতে সবজি চাষ শুরু করেন। সবজি চাষে প্রথম বছরেই মোটামুটি সফলতা পেয়ে যান। এরপর থেকে প্রতিবছর সবজি ও ফল চাষের জমি বাড়াতে থাকেন।বর্তমানে এক বিঘা জমিতে সজনেসহ মোট দশ বিঘা জমিতে সবজি ও ফল রয়েছে তার। পেপে, লাউ, বেগুন, ঢেড়স, করলা, দুন্দল, কুশি, ঝিঙ্গে, ডাটা, কুমড়া, লেবু, চুইঝালসহ নানা জাতের সবজি রয়েছে তার ক্ষেতে। বসত ঘরের সামনে রয়েছে শতাধিক প্রকার চারার ছোট নার্সারী। টিটুর কৃষি ক্ষেতে সারা বছর ৪ জন নারী ও ৪জন পুরুষ নিয়মিত কাজ করেন।পরিচর্যা ও কর্মচারীদের ব্যয় মিটিয়ে সবজি ক্ষেত ও নার্সারি থেকে প্রতিবছর ৫ লক্ষ টাকার বেশি আয় করেন টিটু। ২০২০-২১ অর্থ বছরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সফল কৃষক হিসেবে পুরুস্কার পান তিনি। টিটুর সবজি ক্ষেত ও ফল বাগান দেখে অনেকেই ঝুকছেন সবজি ও ফলচাষে।

স্থানীয় হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, টিটু ভাইয়ের সফলতা দেখে আমাদের খুব ভাল লেগেছে। আমিও সবজি চাষ শুরু করেছি।

ইউনুস আলী নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, টিটু ভাইয়ের সবজি ক্ষেত খুবই ভাল। অনেক সুন্দর। আয়ও করেন অনেক টাকা। আগামী বছর আমিও দুই বিঘা জমিতে সজনে ও লেবু চাষ করব।

আব্দুল আজিজ টিটুর সবজি ক্ষেতের শ্রমিক মোঃ হেদায়েত শেখ বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা সবজি ক্ষেতে কাজ করি। আগাছা পরিস্কার, সার দেওয়া, পানি দেওয়াসহ নানা কাজ করে দিন কেটে যায় আমাদের। ভালই আছি তার এখানে কাজ করে।

নারী শ্রমিক হালিমা বেগম ও শাহানারা বেগম বলেন, টিটুর সবজি ক্ষেতে কাজ করে প্রতিদিন ২৫০ টাকা পাই। এতে আমাদের ভালই চলে। এখানে কাজ করে আমাদের যেমন সংসার চলে, তেমনি টিটুরও আমাদের মাধ্যমে ভাল আয় হয়।

আব্দুল আজিজ টিটু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সবজি চাষ করি। সবজির চাষ পদ্ধতি, পুষ্টিগুন, দাম ও বিক্রয় কৌশল নিয়ে আগ্রহ থাকায় নিয়মিত কৃষি বিষয়ক ভিডিও দেখি। ইউটিউবে ওডিসি-৩ জাতের সজনের গুনাগুন ও ব্যাপক ফলনের কথা জানতে পারি। বর্তমানে ১০ বিঘা জমিতে আমার নানা ধরণের সবজি ও ফল রয়েছে। এছাড়া বিশেষ করে এক বিঘা জমিতে বারমাসি সজনে চাষ করেছি। খুব দ্র“ত বড় হয়েছে গাছগুলো। মাত্র আট মাসে আমার গাছে ফুল এসেছে। গাছের বৃদ্ধিও অনেক ভাল। আশাকরি অনেক ফল হবে এবার।

তিনি আরও বলেন, আসলে সবজি ও ফল চাষ একটি লাভ জনক পেশা। কারও যদি জমি থাকে সে খুব সহজে সবজি ও ফল চাষ করে বেকারত্ব ঘোচাতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, আব্দুল আজিজ টিটু একজন ভাল চাষী। আমাদের পরামর্শে সে সবজি ও নানা ধরণের ফল চাষে সফলতা পেয়েছে। বেকার বসে না থেকে টিটুর মত সবাই যদি সবজি ফল চাষে এগিয়ে আসে তাহলে দেশে আর বেকার থাকবেনা বলে দাবি করেন তিনি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত