শ্রীনগর থানা থেকে সুইচ গিয়ারসহ আটক কৃতদেরকে দেড় লাখ টাকায় ছেড়ে দেয়ার ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ১৯:৩৫ | আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ২৩:৩৫

শ্রীনগরে সুইচগিয়ার সহ আটক পাঁচ যুবককে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার বক্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে । সুইচ গিয়ার সহ আটক মোঃ আকাশ শেখ নিজেই এ বক্তব্য ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে পুরো মুন্সীগঞ্জ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন । এই ঘটনায় শনিবার রাতে শ্রীনগর থানার এসআই আমির হামজাকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জানাগেছে, শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল মান্দ্রা এলাকার ৫ যুবক শুক্রবার বিকালে লৌহজং উপজেলার সামুরবাড়ি এলাকায় ঘুরতে যায়। ফেরার পথে বাইক দুর্ঘটনা ঘটলে তারা রাস্তা সংক্ষিপ্ত করার জন্য মাশুরগাও-লৌহজং সড়ক দিয়ে রওনা হয়। রাত নয়টার দিকে তারা শ্রীনগর উপজেলার গোয়ালীমান্দ্রা এলাকায় পৌছলে সেখানে টহলরত শ্রীনগর থানার এসআই আমির হামজা সন্দেহভাজন হিসেবে সম্পদ শিকদার (২৫),মো.আকাশ শেখ(২৬),মো. অন্তর(২৭),মো. হানিফ(২৬) এবং মো.পান্নু (২৮) কে আটক করে। এসময় আকাশের কাছ থেকে একটি সুইচগিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে মোঃ হানিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরৃ সাইকোলজি বিভাগের ছাত্র। অপরদিকে সম্পদ শিকদার মাদ্রাসায় মাওলানা বিভাগে অধ্যয়নরত। পাঁচ যুবককে থানায় আনার পর তাদের পারিবারের লোকজন থানায় ছুটে আসে। পরদিন সকালে তাদেরকে মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠানোর জন্য জেলা থেকে গাড়ি ডেকে আনা হয়। কিন্তু ওইদিন আটক অপর আসামীদের আদালতে পাঠানো হলেও ওই পাঁচ যুবককে পাঠানো হয়নি। পরে বিকাল চারটার দিকে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতে আকাশ এক ভিডিও বার্তায় জানায়, দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে শ্রীনগর থানা পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। আকাশ আরো বলেন, সম্ভবত এর ডিলিংস করেছে শ্রীনগর থানার এসআই আমির হামজা। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে আকাশের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়িয়ে পরলে ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ এসআই আমির হামজাকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করে নেয়। অপর একটি সূত্র জানায়, শনিবার তাদেরকে ছাড়িয়ে আনার সময় এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে,বাকী পঞ্চাশ হাজার টাকা রবিবার সকালে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আকাশের ভিডিওর কারনে আমাদের উপর প্রেসার আসতে থাকে।
রবিবার দুপুরে ভাগ্যকুল মান্দ্রা এলাকায় আকাশের বাড়িতে গেলে, তার মা জানান সকালে আটক হওয়া বাকী চার জনের পরিবারের লোকজন এসে আমাকে শাসিয়ে গেছে।
আকাশের স্ত্রী জানান, রাতে ভিডিও করার পর থেকেই ফোনে হুমকির কারনে আকাশ বাড়ি ছাড়া। সে ঢাকায় লিফটের মেকানিক হিসাবে কাজ করে। ঈদে বাড়িতে এসেছিল।
এই বিষয়ে শ্রীনগর থানা থেকে প্রত্যাহর হওয়া এসআই আমির হামজা জনান,আমি ওদের ৫ জনকে একটা সুইচগিয়ার চাকু সহ পাই। পরে তাদের ধরে থানায় নিয়ে আসি। আসামি ছেড়ে দেওয়া ও চালান দেওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। আমি হুকুমের গোলাম,তবে আমি তাদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে এককাপ চাও খাইনি।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ শাকিল আহমেদ জানান, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। আমরা এখনো টাকা নেওয়ার সত্যতা পাইনি। তবে সুইচগিয়ার সহ আটকের পরও তাদেরকে কেন ছেড়ে দেওয়া হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সুইচগিয়ারটি কুড়িয়ে পাওয়া গেছে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, আটককৃতদের অতীত কোন অপরাধ রেকর্ড নেই। এলাকায় খোজ নিয়ে তাদেরকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত