শেষ বল পর্যন্ত নাটক জমিয়ে জিতল পাকিস্তান

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩ এপ্রিল ২০২১, ১০:১১ |  আপডেট  : ১০ মে ২০২৪, ০০:২৯

পাকিস্তান দল তখন ব্যাটিংয়ে। উইকেটে বাবর আজম। পাকিস্তানের খ্যাতিমান ক্রিকেট-পরিসংখ্যানবিদ মাজহার আরশাদের টুইট, ‘বাবর আজমের ড্রাইভের সময় পৃথিবী থেমে যায়।’ 

সত্যি, তাঁর কাভার ড্রাইভ ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে মনোলোভা। আর তাই বিরাট কোহলি কিংবা বাবরের মাপের কেউ ব্যাটিং করার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হয়ে ওঠে। সেঞ্চুরিয়নে আজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানের ৩ উইকেটের জয়ে ‘নিউক্লিয়াস’ হয়ে ওঠা বাবরকে নিয়ে মেতে ছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

তার কারণও আছে। পাকিস্তান তো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান কম পায়নি। তাদের অনেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতীয় দলের। কিন্তু একটি জায়গায় কেউ সেভাবে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। বাবর আজ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পাকিস্তানের কোনো অধিনায়কেরই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি ছিল না। 

বাবর ‘পথিকৃৎ’ হিসেবে সে পথটা বের করলেন তাঁর ব্যাটে। তাঁর ১০৪ বলে ১০৩ রানের ইনিংসটা সাজানো মনোমুগ্ধকর ১৭টি চারে।

এমন ইনিংসকেও অবশ্য বৃথা বানিয়ে ফেলতে বসেছিলেন তাঁর সতীর্থরা। হেসেখেলে জেতা যায় এমন ম্যাচকে শেষ ওভারের শেষ বলে টেনে নিয়েছে পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ উইকেটে ২৭৩ রানের স্কোর তাড়া করে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে পাকিস্তান। শেষ ওভারে ৩ দরকার ছিল তাদের। সে রান তুলতে ৬ বলই দরকার হয়েছে সফরকারীদের।

তৃতীয় ওভারে ফখর জামান (৮) কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে উইকেটে আসেন বাবর। তাঁর সঙ্গে ইমাম-উল-হকের ১৮১ বলে ১৭৭ রানের জুটি পাকিস্তানের জয়ে ভিত গড়ে দেয়। প্রোটিয়া পেসার আনরিখ নর্কিয়াকে চার মেরে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরের বলেই আউট হন বাবর। 

১৭৭ রানের জুটিতে বাবরের অবদান ১০৩। পাকিস্তানের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ১৮৬। ১০৯ বলে ৮৮ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। ৮ উইকেটে এ রান তোলা কোনো কঠিন কিছু নয়।

মাঝে এক ওভার পর ইমামও (৭০) আউট হয়ে যান। এবারও বোলার নর্কিয়া। ১০ রানের মধ্যে দানিশ আজিজ ও আসিফ আলীকেও তুলে নেন নর্কিয়া। এই ফাস্ট বোলারের সুবাদে ৫ উইকেটে ২০৩ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাদাব খান অবশ্য বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন। ৪০ রান করে রিজওয়ান ফিরলেও শাদাবের দৃঢ়তায় ম্যাচটা শেষ ওভারে এগিয়ে থেকেই শুরু করে পাকিস্তান।

অথচ আগের দুই ওভারে জমে উঠেছিল ম্যাচ। ৪৮তম ওভারে রিজওয়ান আউট হয়ে যান। শেষ ২ ওভারে ১৪ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। ওই ওভারে ১১ রান দেন পেসার লুঙ্গি এনগিদি। ওই ওভারে ‘নো বল’ (বোল্ড আউটের সুযোগ নষ্ট) ছাড়াও শাদাবের ক্যাচ ছাড়েন প্রোটিয়াদের হয়ে সেঞ্চুরি করা রাসি ফন ডার ডুসেন। 

৩৩ রান করা শাদাব আউট হন শেষ ওভারের প্রথম বলে। পরের তিন বলে ফাহিম আশরাফ কোনো রান নিতে পারেননি। এর মধ্যে চতুর্থ বলটি অবিশ্বাস্যভাবে ছেড়ে দেন! শেষ ২ বলে ৩ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। পঞ্চম বলে ২ রান নেন ফাহিম। শেষ বলে ১ রানের সমীকরণ পয়েন্টে থাকা ফিল্ডারকে ফাঁকি দিয়ে মিটিয়ে নেন ফাহিম। তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।

৭৬তম ইনিংসে এসে ওয়ানডেতে ১৩ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাবর। আর কোনো ব্যাটসম্যান এত কম ইনিংস খেলে ১৩ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। এর আগে ফন ডার ডুসেনের ১২৩ রানের ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫০ রান করেন ডেভিড মিলার। প্রোটিয়াদের হয়ে ৫১ রানে ৪ উইকেট নর্কিয়ার। পাকিস্তানের হয়ে ২টি করে উইকেট ফাহিম ও শাহীন শাহ আফ্রিদির।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত