লৌহজং ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সমালোচনার ঝড়

  লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা 

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২১, ১০:৪৯ |  আপডেট  : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২১:১৮

লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কারণ, কমিটিতে অছাত্র, বিবাহিত, প্রবাসী, ব্যবসায়ী,  বহিষ্কৃত ও বিতর্কিতরা পদ পেয়েছেন।       

গত ২৭ জুলাই অনুমোদিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা কমিটিতে উপরোল্লিখিতরা পদ পেয়েছে। এছাড়া গঠনতন্ত্রে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের কথা উল্লেখ থাকলেও ১৯৪ সদস্য বিশিষ্ট অনুমোদিত কমিটিতে ব্যবসায়ী ও অছাত্ররাও স্থান পেয়েছে বলে বর্তমান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ। 

এমনকি খিদিরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি তন্ময় মন্ডলকে কমিটিতে সহ-সম্পাদক পদ দিয়ে উপজেলা কমিটি অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখা। 

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও উপজেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের আহবায়ক  হামিদুর রহমান জুয়েল বলেন, ঢাউশ আকারের এই কমিটি দেখে মনে  প্রশ্ন জাগে- এটা ছাত্রলীগ নাকি গণলীগ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের অভিযোগ, গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে সভাপতি স্বজনপ্রীতির কারণে  রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা না থাকার পরেও সভাপতি ইমন তার ছোট ভাই ও  পদ পেয়েছে।

২০১৯ সালের ২৯ মে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লৌহজং উপজেলা কমিটির ফরহাদ হোসেন ইমনকে সভাপতি ও অনয় হাসান বেপারীকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করে অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর লৌহজং উপজেলা কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে ৭ মাস পর গত ২৭ জুলাই ছাত্রলীগ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো. ফয়সাল মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ পাভেল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছে। 

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমনের বয়স ৩১। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কর্মীদের বয়স অনূর্ধ্ব ২৮। এছাড়া ইমন ঠিকাদারি ব্যবসার সাথেও জড়িত। অনুমোদিত কমিটির সহ-সভাপতি জুবায়ের সিকদার ও রুবেল মোল্লা দুই জনই বিবাহিত এবং অপর সহ-সভাপতি সজল ফরায়েজী প্রবাসে রয়েছে। বিবাহিত ও প্রবাসীদের কমিটিতে পদ দেওয়ার বিষয়টি গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগ লৌহজং উপজেলা কমিটির সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার পর একজন বিয়ে করেছেন কিন্তু এখনও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেনি। অপরজন জীবিকার তাগিদে প্রবাসে পাড়ি জমান। এ দু’জন ছাড়া অনুমোদিত কমিটির সকলেই শিক্ষার্থী। এছাড়া তিনি ও কমিটির সাধারণ সম্পাদকও বর্তমানে লেখাপড়া করছেন।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো. ফয়সাল মৃধা জানান, ৭ থেকে ৮ মাস আগে জমা দেওয়া কমিটি যাচাই-বাছাই করে গত ২৭ জুলাই অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে বিবাহিত ও প্রবাসী কেউ থেকে থাকলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ছাত্রলীগের বর্তমান, সাবেক ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিশাল আকারের এ কমিটিতে লাখ লাখ টাকার পদ-বাণিজ্য হয়েছে। তাদের দাবি, বিতর্কিত এ কমিটি ভেঙে দিয়ে প্রকৃত ছাত্রদের নিয়ে পুনরায় কমিটি গঠন করা হোক।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত