লৌহজংয়ে ইউপি মেম্বার জালিয়াতি মামলায় হাজিরা না দিয়ে আত্মগোপনে
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৩২ | আপডেট : ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৯
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের হলদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার শংকর চন্দ্র ঘোষ জালিয়াতি মামলায় হাজিরা না আত্মগোপনে আছে। যার বিরুদ্ধে দু’টি জালিয়াতি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় জামিনে থাকলেও অপর মামলায় হাজিরা না দিয়ে পালাতক রয়েছে।
গত প্রায় দুই বছর আগে তার বাড়ির নিকটতম সাধন সরকারের স্ত্রী’র সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাধন সরকারের স্ত্রী’র নিকট থেকে সাধনের হলদিয়া বাজার শাখা সোনালী ব্যাংক চেক বই নিয়ে দুই জনে জোগসাজস করে সাধনের ব্যাংক একাউন্ট হতে ১২ লাখ টাকা তুলে নেন। একই সাথে সাধনের নামে থাকা হলদিয়া বাজারের দোকান ঘরটিও জালিয়াতি করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে লিখে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধন সরকার শংকর মেম্বার ও তার (সাধনের) স্ত্রী’র নামে মামলা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধনের সাথে তার স্ত্রী’র বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।পরে ওই মামলায় জামিনে বের হয় শংকর মেম্বার।
জামিনে বের হওয়ার কিছুদিন পরে তিনি স্থানীয় তপন মাহমুদের ফেসবুক আইডির মাধ্যমে জানান ‘ শংকর মেম্বারের ১২ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেনি।’ বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে সাধন সরকার ও তার পরিবারকে। তিনি তার উকিলের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এটি একটি ভূয়া কাগজ। ওই মামলায় এখনও চার্জ গঠনই হয়নি। তাই তাকে বাদ দেবার প্রশ্নই আসেনা।
সাধন সরকার খোঁজ নিয়ে দেখেন, শংকর মেম্বার একটি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বিচারক এবং সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর ও সিলমোহর জালিয়াতি করে স্থানীয় তপন মহমুদের ফেসবুক আইডি থেকে সেটি পোস্ট করায়। বিষয়টি সাধনের কাছে পরিস্কার হলে তিনি শংকর মেম্বারের বিরুদ্ধে প্রায় ২ মাস পূর্বে আরো একটি জালিয়াতির মামলা করেন। এ মামলায় শংকর মেম্বার হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। গত ২০ তারিখ ছিল তার জামিনের শেষ মেয়াদ। কিন্ত ওই দিনের মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির না হয়ে পলাতক রয়েছে।
এদিকে শংকর মেম্বারকে না পেয়ে স্থানীয় জনগণের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ওয়ারিশ সনদসহ নানা কাজে মেম্বারকে না পেয়ে তাদের প্রয়োজনীয় কাগজে মেম্বারের স্বাক্ষর নিতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের জনসাধারণ কোন কাজ করতে পারছেননা। শংকরের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে কেউ যোগাযোগও করতে পারছে না।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল হক জানান, প্রায় সপ্তাহ দুই ধরে শংকর মেম্বার পরিষদে আসেননা। তিনি এলাকায় না থাকায় ওয়ারিশ সনদ প্রদানে বিঘ্ন ঘটছে। তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার বিরুদ্ধে দুটি জালিয়াতির মামলা রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তার অনুপস্থিতিতে জনগনের যে সমস্যা হচ্ছে তা আগামী শুক্রবারের মধ্যে সমাধান করে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
লৌহজং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শংকর মেম্বারের বিরুদ্ধে দুটি জালিয়াতির মামলা রয়েছে। একটি চেক জালিয়াতি ও অপরটি আদালতের বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতি। প্রথম মামলায় তিনি স্থায়ী জামিনে রয়েছেন। দ্বিতীয় মামলায় তিনি উচ্চ আদালত হতে ৬ সপ্তাহের জামিন নিয়ে নিন্ম আদালতে হাজির হননি। পুলিশ তাকে খুজছে। তাকে পেলে গ্রেপ্তার করা হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত