রাশিয়া ছাড়া বাকি সবাইকে স্বাগত জানানো হবে, বিশ্বনেতাদের নিয়ে একটি সম্মেলন

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১ জুন ২০২৩, ১৩:১৮ |  আপডেট  : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:১০

ইউক্রেন ও দেশটির মিত্ররা বিশ্বনেতাদের নিয়ে একটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। তবে এই আয়োজনে রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের এক সিনিয়র উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় কূটনীতিকরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। যুদ্ধ অবসানে কিয়েভের শর্তের প্রতি সমর্থন শক্তিশালী করার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাদ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সম্মেলনের পরিকল্পনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এই আয়োজনের প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মতো নেতার দৃঢ় সমর্থন রয়েছে। তিনি রাশিয়ার পক্ষ নেওয়া দেশগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাইছেন। এমন দেশগুলোকে সম্মেলনে সুযোগ না দিলে যুদ্ধ নিয়ে অবস্থান নিতে অস্বীকৃতি জানাবে ফ্রান্স।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, সত্যিকার অর্থে শান্তিতে বসবাসে আগ্রহী সভ্য বিশ্বকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা চাই আমরা। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা সম্ভব নয় যতক্ষণ দেশটির সেনারা ইউক্রেনে অবস্থান করছে। ভূখণ্ডগত কোনও ছাড় দেবে না ইউক্রেন।

ইউরোপীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের ১০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার জন্য কিয়েভের সঙ্গে তারা কাজ করছেন। যাতে করে তা ভারত, ব্রাজিল, সৌদি আরব ও চীনের মতো বিশ্বশক্তির কাছে আরও গ্রহণযোগ্য হয়।

ইয়ারমাক বলেছেন, গ্লোবাল সাউথসহ পুরো বিশ্বকে বাদ দিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্ভব।

চীন, ব্রাজিল ও ভারতের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় লিপ্ত হতে গত কয়েক মাস থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে কিয়েভ। ইয়ারমাক বলছেন, সবগুলো দেশের মত জানতে প্রস্তুত ইউক্রেন, এমনকি চীন ও ব্রাজিলের প্রতিনিধির মতও।  

জেলেনস্কির দশ দফা শান্তি পরিকল্পনায় ভূখণ্ডগত নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে যুদ্ধবন্দিদের বিনিময় ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া পারমাণবিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করেছে এবং রুশ আক্রমণে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর নেতাদেরও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। পশ্চিমা কূটনীতিকদের ধারণা, ১১ জুলাই ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলন শুরুর আগে এই আয়োজন হতে পারে। লিথুয়ানিয়ার রাজধানীতে অনুষ্ঠেয় ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা ও জোটের সঙ্গে কিয়েভের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।

ইউরোপীয় কূটনীতিকদের মতে, এই বছরের শুরুতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো নেতাদের কাছে পৌঁছানোর বিসয়ে ম্যাক্রোঁর সহযোগিতা চেয়েছিলেন জেলেনস্কি। এই আলোচনার বিষয়টি পরে একটি সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনায় গড়ায়। ম্যাক্রোঁ প্যারিসে সম্মেলনটি আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। ডেনমার্ক ও সুইডেনও এটি আয়োজনে আগ্রহ দেখিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, আমন্ত্রিতদের কোনও নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করা হয়নি। তবে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ব্রাজিল, চীন, ভারত ও অপর অ-পশ্চিমা দেশগুলোকে উপস্থিত করতে চাইছেন।

এসব আলোচনায় জড়িত এক কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত হবেন বলে তারা আশা করছেন। তবে চীনা প্রেসিডেন্টের বিষয়ে তারা এখনও নিশ্চিত নন।

এক সময় মোদি যুদ্ধ নিয়ে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। যুদ্ধ শুরুর পর একাধিকবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। তবে জেলেনস্কির সঙ্গে তিনি ফোনালাপ করতে এক বছরের বেশি সময় নিয়েছেন। বেইজিংয়ে ম্যাক্রোঁর সফরের পর শি-জেলেনস্কি ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। চীনা কর্মকর্তারা বরাবর রাশিয়া ও পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের অংশীদারিত্বের ওপর জোর দিয়ে আসছেন।

সম্মেলনের পরিকল্পনায় জড়িত এক সিনিয়র ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেছেন, রাশিয়া ছাড়া বাকি সবাইকে স্বাগত জানানো হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত