রংপুরে সোনালী আঁশের বাম্পার ফলন

  সারওয়ার আলম মুকুল

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৩, ১৬:২২ |  আপডেট  : ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:২১

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন গ্রামে চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম পাওয়ার আশায় সোনালী আঁশের সবুজ দোল দেখে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে। এবার ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে বলে। বেশ কয়েকবার সোনালী আঁশ কৃষকের গলায় ফাঁস হয়েছিল সেখান থেকে কৃষক প্রচন্ড খরাকে উপেক্ষা করে সেচ দিয়ে দাম পাওয়ার আশাকে জাগিয়ে রেখেছিল। কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীর চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রামের উচু জমিতে চলতি মৌসুমে পাটের ব্যাপক চাষ হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে চলতি মৌসুমে বৃষ্টির পরিমাণ কম এবং খরা হলেও কৃষক সেচ দিয়ে পাট বুনেছেন। কৃষক আলু তোলার পর জমিতে পাট বুনেছে। কিছু কিছু কৃষক চরের যেসব জমিতে ধান ভাল হয় না সে সব জমিতে পাট চাষ করেছে। আনুপাতিক হারে চরে পাটের চাষ হয়েছে বেশী। বর্ষার শুরুতেই আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় কৃষক বেজায় খুশি। বৃষ্টির ফলে পাট সবুজ থেকে আরও গাঁঢ় সবুজ আকার ধারন করেছে। কোন কোন জমিতে পাট ৭থেকে ৮ফিট লম্বা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে। গদাই গ্রামের পাট চাষি আলামিন, পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের আনারুল, জানান চলতি মৌসুমে সারের কোন সংকট ছিল না, ফলে সঠিক সময় সার দিতে পেরেছে। প্রচন্ড খরায় কিছু জমি নষ্ট হওয়ার মত হলেও বৃষ্টি হওয়ায় তা আবার সজিবতা ফিরে পেয়েছে। এ বছর রোগবালাইও তেমন হয়নি। বর্তমানে মাঠে মাঠে সবুজ শ্যামলের সমারোহ। তারা জানায় গত দুবছর সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করায় চাষিরা ভাল দাম পেয়েছে। তবে ফরিয়া দালালরা বেশী লাভবান হয়। ঢুসমারা চরের চাষি কোব্বাত জানান, ফরিয়া দালাল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় মোটা অংকের লাভটা চলে যায় তাদের কাছে। তাই ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা যেন সিন্ডিকেট করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন। এছারা পাট খড়ির বেশ চাহিদা রয়েছে, তা বিক্রয় করেও তাদের বাড়তি আয় হয়। তারা চায় এবছরও সরকার ধান ও গমের মতো কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পাট ক্রয় করলে কৃষক ভাল দাম পাবে। সরকার পাটের দাম ভাল দিবে এ আশায় কৃষক আশায় বুক বেঁধেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে এর মধ্যে তোষা ৬৫০, দেশি ৩৫ হেক্টর। 

উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান চলতি মৌসুমে ১হাজার চাষিকে পাট বীজ বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। ফলে পাট চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার শাহানাজ পারভীন জানান পাট চাষে চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এবছর আবহাওয়া কিছুটা প্রতিকুল থাকলেও ফলন ভাল হয়েছে। কৃষক ভাল ফলন ও দাম ভাল পাবে বলে আশা করছেন। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত