মুন্সীগঞ্জে নূর ইসলাম হত্যাকান্ডের সাজানো নাটকের রহস্য উদঘাটন
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৩ | আপডেট : ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪
পিতা মোঃ নূর ইসলাম হালদারকে হত্যাকান্ডের পর মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গেলে ডাকাত কর্তৃক মেরে ফেলার সাজানো নাটকের রহস্য উদঘাটন করেছে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ। হত্যার ১৭ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের অভিযান ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে এই রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার।
মঙ্গলবার [১১ এপ্রিল] বেলা দুইটায় মুন্সিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের সাজানো নাটকের রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল মামুন বিপিএম পিপিএম।
তিনি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, গত রবিবার [৯ এপ্রিল] মুন্সীগঞ্জ সদর থানার আধারা ইউনিয়নের মিঝিকান্দি এলাকার মো: নূর ইসলাম হালদার [৪৭] পিতা : মৃত সুবুদ হালদার দাম্পত্য কলহের জেরে তার স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে [৪০] মারপিট করে। এতে স্ত্রী তাছলিমা বেগম মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সেখান থেকে মুক্তারপুর নিবাসী মেয়ে পিয়ারা বেগমের কাছে চলে যান। এদিকে মোঃ নূর ইসলাম হালদার তার বোন মোসাঃ হামিদা বেগম [৪৫] এর বাসায় চলে যায়।
মাকে মারপিটের কথা শুনে তাদের ছেলে সুমন হালদার [৩০], মোহাম্মদ আলি হালদার [২৩] ও রাসেল হালদার [২১] ক্ষিপ্ত হয়ে পিতা মোঃ নূর ইসলাম হালদারকে আশেপাশের গ্রামে খুঁজতে থাকে। ৯ এপ্রিল পিতা নূর ইসলাম হালদার বাড়ি ফিরে এলে ১০ এপ্রিল আনুমানিক রাত তিনটার দিকে মিঝিকান্দিস্থ তার নিজ বাড়ির পশ্চিম ভিটির দো-চালা টিনের ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে তার তিন ছেলে অজ্ঞাত নামা ২/৩ জনসহ পিতা নূর আলী হালদারের মাথা, কোমর, পিঠ ও কাঁধসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর আহত করে।
হত্যার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাছ ধরা ও ডাকাত কর্তৃক তাদের পিতাকে আঘাতের কথা প্রচার করে। এসময় তার দুই ছেলে সুমন হালদার ও আলি হালদার পিতা নূর ইসলাম হালদারকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন এবং অপর ভাই রাসেল হালদার পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে মুন্সীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তারিকুজ্জামান ও মুন্সিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খাইরুল হাসান পিপিএম নূর ইসলাম হালদারের ছেলে মোহাম্মদ আলীর কথা সন্দেহজনক হওয়ায় সুমন হালদার ও মোহাম্মদ আলি হালদারকে পুলিশি হেফাজতে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা সরাসরি হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের পিতা কর্তৃক তাদের মাকে নির্যাতন ও পারিবারিক কলহের জেরের ধারাবাহিকতায় হত্যাকান্ডটি ঘটানো হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গেছে যার মামলা নং ২৩ তাং- ১০/০৪/২০২৩ খ্রিঃ ধারা - ৩০২/ ২০১/৩৪।
পলাতক আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। একই সাথে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্ত করে পুলিশ রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হবে বলেও জানা গেছে বিজ্ঞপ্তিতে৷
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত