মাদারীপুরে কুমার নদে অবৈধভাবে দখলে নেয়া বাঁধ ভেঙে দিয়েছেন প্রশাসন
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৪৭ | আপডেট : ১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৩৭
মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকায় কুমার নদে চর অবৈধভাবে দখলে নেয়া বাঁধ ভেঙে দিয়েছেন প্রশাসন। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটায় মস্তফাপুর স্লুইসগেট এলাকায় মাটিকাটার যন্ত্র এক্সকাভেটর দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান চালান সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন।
মস্তফাপুরে কুমার নদে জেগে ওঠা চর অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষের জন্য ঘের তৈরি করেন মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন খান। স্থানীয় বাসিন্দারা এর নাম দিয়েছিলেন ‘চেয়ারম্যান প্রজেক্ট’। নদের চরে বাঁধ উচ্ছেদ হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশাসনের সূত্র জানায়, কুমার নদের চরে ৫০ নম্বর চতুরপাড়া মৌজায় বিআরএস ১ নম্বর খতিয়ানে ৬৩৪ নম্বর দাগে ৩ একরের বেশি জমি খাল শ্রেণি হিসেবে রেকর্ড। এ খালের জমিটা লোয়ার কুমার নদ হিসেবেই পরিচিত। সরকারি এ খাস জমির বিশাল একটি অংশ এক্সকাভেটর দিয়ে চারপাশের মাটি কেটে বেডি বাঁধ দিয়ে ঘের তৈরি করেন মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান।
এ সস্পর্কে মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন বলেন, নদে জেগে ওঠা চরের জমিতে ইউপি চেয়ারম্যান অবৈধভাবে ঘের করে মাছ চাষ ও শাক সবজি চাষাবাদ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। একজন চেয়ারম্যান কর্তৃক সরকারি খালের জায়গা এ ভাবে দখল করা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি অনুমতি ছাড়া ব্যবহাররের কোন সুযোগ নাই। এই কাজ করার জন্য চেয়ারম্যান তার পরিষদে যে মিটিং করে যে রেজুলেশন করেছে, তা তিনি কোনোভাবেই করতে পারেন না।
ইউএনও আরও বলেন, তিনি (চেয়ারম্যান) কেনো চর দখলে নিয়ে এমন কাজ করলো, সেই বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপতত জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যানের দখল করা বাঁধ ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে দিয়েছি এবং বাঁশের খুঁটি গেঁথে লাল পতাকার নিশান লাগিয়ে নদের খাস জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয় মস্তফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান বলেন, আমি ইউনিয়ন পরিষদে মিটিং করে চরে সুন্দর্যবর্ধণ একটা কাজ করতে রেজুলেশন করেছিলাম। কিন্তু সেটা প্রশাসন মেনে নেয়নি। তাই তাদের সম্মানে আমি উপস্থিত থেকে আগের মতো মাটি ঠিক করে দিচ্ছি। তবে জনগণ চেয়েছিল পরিত্যক্ত এ জায়গায় সুন্দর কিছু হোক। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষের লোকজন প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে আবার পরিত্যক্ত করলেন।
উচ্ছেদ অভিযানে মাদারীপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. সাইফুল ইসলাম, চর দখলে অভিযুক্ত ও মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান, মস্তফাপুর ইউনিয়নের ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আলেয়া আক্তার ও সদর থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত