মাদারীপুরের লাগামহীনভাবে বাজারগুলোতে সবজির দাম বেড়েই যাচ্ছে

  শফিক স্বপন, মাদারীপুর

প্রকাশ: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৪৫ |  আপডেট  : ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৪:০৫

মাদারীপুরের বাজারগুলোতে  সবজির দাম বেড়েই যাচ্ছে লাগমহীনভাবে। কেজিতে প্রতিটি সবজির দাম  বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা করে। তবে সবজির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। মাছ, আলু, পেঁয়াজের দামেও পরিবর্তন আসেনি।

মাদারীপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আর বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছোট ফুলকপি ৩০ টাকা এবং বড় ফুলকপি ৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছিল। ফুলকপির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকা টমেটোর। এক সপ্তাহ আগে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাছাই করা ভালো মানের পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে বেগুন। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে গাজরের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। এতে এখন প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।

মাদারীপুর পৌর শহরের শকুনী দৈনিক বাজারের ব্যবসায়ী লুৎফর মাল বলেন, 'আস্তে আস্তে শিম, ফুলকপি, পাকা টমেটোর সরবরাহ কমে আসছে। তাছাড়া শীত আর কুয়াশায় কিছু সবজি নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে সবজির দাম বেড়েছে। আমাদের ধারণা সামনে সবজির দাম আর বাড়বে, কমার সম্ভবনা খুবই কম। সরবারহ বেশি থাকলে দামও একটু কমে আসবে। আমরা যেমন আনি, তেমন বিক্রি করি।’

কুলপদ্বি বাজারের ব্যবসায়ী মোক্তার ঘরামী বলেন, ‘এক সপ্তাহে আগে যে ফুলকপি ৩০ টাকা বিক্রি করেছি, সেই ফুলকপি ৪০ টাকা পিস কিনে এনেছি। বিক্রি করছি ৪৫ টাকা পিস। শুধু ফুলকপি নয়, আড়তে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। শীতের সবিজ বলতে আর সেই সবজি নাই। দাম বাড়ায় আমাদের সাথে ক্রেতাদের তর্কবিতর্কও হচ্ছে।’

মাদারীপুর পুরান বাজারে সবজি কেনা শফিক রাজ রনি বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। চাল, তেল, চিনি কোনো কিছু ক্রেতাদের নাগালে নেই। এখন সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। বাজারে ভরপুর সবজি রয়েছে অথচ সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। শীত মৌসুমের শেষ দিক হলেও এত দামে সবজি কিনে খেতে হবে আগে কখনো ভাবিনি। সরকারের এসব বিষয় ভাবা উচিত।’

একই বাজারের আরেক ক্রেতা আয়শা বেগম বলেন, ‘বাজারে ২০০ টাকা নিয়ে গেলে তেমন কোনো সবজি কেনা যায় না। তিন চার পদের সবজি কিনলেই টাকা শেষ হয়ে যায়। বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার ওপরে। এই সময়ে সবজির এত দাম হবে কেন, বুঝি না। শীত তো এখনো চলে যায় নাই। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে আমাদের মতো গরিব মানুষ অনেক কষ্টে আছে। আমাদের সংসার কীভাবে চলছে তা শুধু আমরাই জানি। আমাদের কষ্ট কেউ দেখে না।

মাদারীপুর  কৃষি বিপনন কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, ‘ভোক্তাদের মালামাল কেনা-বেচার জন্যে আমরা সব ধরণের সুযোগের বিষয়টি নিয়ে ভাবি। অনেক সময় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে সবজির দামও বেড়ে যায়। তাই আমরা চেষ্টা করি বাজারে কেউ কৃত্রিম সংকট করলে ব্যবস্থা নেয়ার। তাছাড়া কেউ অভিযোগ দিলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানাও করা হয়। আমরা চেষ্টা করি বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারের।’

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত