মাদারিপুরে সরিষা চাষে লাভবান হয়েছেন কৃষক ও মৌয়ালরা

  শফিক স্বপন মাদারীপুর

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:০৭ |  আপডেট  : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৩৩

প্রকৃতি সেজেছে হলুদ বর্ণের অপরূপ সাজে। শীতের সোনাঝরা রোদে মাদারীপুর জেলার কালকিনি ও ডাসার  উপজেলায় বিস্তৃর্ন মাঠজুড়ে যেন ঝিকিমিকি করছে হলুদ ফুলের সমারোহ। সন্ধ্যা নামার সকথে সাথে পশ্চিমাকাশের নরম রোদে সরিষার ফুলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। মাদারিপুরে  ফসলের মাঠে-মাঠে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ।  কৃষকরা বলছেন, বারি-১৪, বারি-১৭ ও বিনা-৯ আধুনিক জাতের সরিষা চাষ হয় এ অঞ্চলে। এতে শুধু তেলের চাহিদাই নয়, গো-খাদ্যের খৈলের চাহিদাও পূরণ হয়। সেইসঙ্গে জ্বালানি ও মধু সংগ্রহ করেও সচল থাকছে সংসারের চাকা। 

মৌমাছি মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে মৌমাছির দল। এই বাক্সগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার মেলিফিয়া প্রজাতির মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করা হয়। একেকটি বাক্সে প্রায় লক্ষাধিক মৌমাছি থাকে। এখন পর্যন্ত আমার ৫০ হাজার টাকার মতো মধু বিক্রি হয়েছে আশাকরি আরও লাখ খানেক টাকার মধু বিক্রি করতে পারবো।ফুল থেকে মৌমাছিদের মধু সংগ্রহের সময় পরাগায়নের ফলে বেড়ে যায় সরিষার ফলনও। এতে মৌয়ালদের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন সরিষা চাষিরাও। কালকিনিতে এ বিষয়ে সরিষা চাষি হামিদ মিয়া বলেন, "প্রতি বছরই আমার ক্ষেতে মৌয়ালরা ২০০ বাক্স বসায়। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু আহরণ করলে পরাগায়ন হয়, এতে উৎপাদন বাড়ে। তাই তিনি ও আশপাশের জমির মালিকেরা মৌচাষিদের উৎসাহিত করছেন।"

মাদারীপুর কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত কৃষকদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।  সরিষা আবাদে ভালো ফলনের আশায় এবার পতিত জমিও আবাদে ভরে উঠেছে। কৃষি বিভাগ বলছে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সরিষা আবাদে কৃষকদের উৎসাহ ও প্রণোদনামূলক সার এবং বীজ দেওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। গত বছরের মত এই বছরও ভাল দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

জেলার ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন কৃষক লুৎফর শেখ বলেন 'হেক্টর বেশি গতবারের চেয়ে এবার আমার জমিতে সরিষা ফলন ভালো হয়েছে, শেষ পর্যন্ত এমন হলে ভালো ফলন হবে।" কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস জানায় এ বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৬০হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এবছর ৪ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৬শ ২৫ হেক্টর বেশি। 

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, ‘ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে দেশীয় সরিষার আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে সরকার। ফলে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সার ও বীজ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে আগামী বছর ফসলটির চাষ আরও বাড়বে এবং ভোজ্য তেলের আমদানিও কমবে।" 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত