মসজিদের টাকা নিয়ে আত্মগোপনে প্যানেল চেয়ারম্যান

  স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২২, ১৯:৩০ |  আপডেট  : ১১ মে ২০২৪, ১২:৩৯

নতুন মসজিদের জন্য সরকারী বরাদ্ধের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে এনায়েত শরিফ নামের বানিশান্তা ইউনিয়ন পরিষদের এক প্যানেল চেয়ারম্যান । এলাকার হাজারো মুসল্লিদের নামাজ পড়ার এক মাত্র জামে মসজিদের কাজ সম্পুর্ন না করে গত প্রায় এক বছর ধরে আত্বগোপনে রয়েছে এনায়েত শরিফ। এদিকে মসজিদটি ঝুকিপুর্ন অবস্থায় পরে থাকায় ফুসে উঠেছে এখানকার সাধারন মুসল্লিরা। তাই সরকারী টাকা আত্মসাতকারী এনায়েত শরিফ ও এর সাথে জড়িতদের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সহ মানববন্ধনও পালন করেছে তারা। শুক্রবার (২৭ মে) জুম্মা নামাদ বাদ বানিশান্তা বাজার সংলগ্ন সুন্দরবন জামে মসজিদের সামনে কয়েকশ মুসল্লি এ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

জানা যায়, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের পশ্চিম পাশে বানিশান্তা বাজার সংলগ্ন নদীর পাড়ে সুন্দরবন নামের একটি পুরনো জামে মসজিদটি অবস্থিত। বর্তমানে নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে মসজিদটি নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেলে বাজারের পশ্চিম পাশে নতুন করে মসজিদ নির্মানের উদ্দ্যোগ নেয় সরকার। তাই স্থানীয়দের দান করা জমিতে নতুন মসজিদ নির্মানের জন্য ২০১৯ সালের প্রথম দিকে এলজিইডি (স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়) থেকে ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৪ টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। এ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পায় খুলনার তেরখাদা মেসার্স মাস্টার এন্টারপ্রাইজ। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে কার্যাদেশ নিয়ে তার প্রতিনিধি বানিয়াশান্তা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত শরিফ মসজিদটি নির্মানের কাজ শুরু করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই একাজের জন্য টাকা বৃদ্ধি লাগবে বলে মসজিদ ফান্ড থেকে আরো ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এ ঠিকাদারের প্রতিনিধি এনায়েত। পরে সামান্য কিছু কাজ করে মসজিদ কমিটির সভাপতিকে ভুল বুঝিয়ে কৌশলে ছাড়পত্র নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও একাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সম্পুর্ন টাকা তুলে নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয় এনায়েত শরিফ। র্দীঘদিন হলেও মসজিদের কাজ না করায় ফুসে উঠে কমিটিসহ মুসল্লিরা। মসজিদটি ঝুকিপুর্ন অবস্থায় পড়ে থাকায় ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে এনায়েত শরিফের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্ত এনায়েত শরিফ ঠিকাদারের গাফিলতির কথা স্বীকার করে মসজিদের কাজ আর করতে পারবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেয় মসজিদ কমিটিকে বলে সেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ অবস্থায় প্রায় এক বছর যাবত ঝুকি নিয়ে মুসল্লিরা নামাজ পড়ে আসছে। মসজিদটির পিলার ও ছাদ নড়বরে বলে জানায় মসজিদ কমিটির সদস্যরা। এব্যাপারে মসজিদ কমিটি ও সাধারন মুসল্লিরা মসজিদের নামের সরকারী টাকা আত্মসাত ও এর সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসুচি ও মানববন্ধন পালন করেছে। শেষে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরিত অভিযোগও করেছেন সাধারন মুসল্লিরা।

এব্যাপারে মসজিদ কমিটির সভাপতি মোঃ মোকলেছুর রহমান বলেন, মসজিদের কাজ শুরু হবে এবং মালামাল আসবে বলে তার কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে সই নিয়েছে মাত্র, কিন্ত কিছু দিন পর জানতে পারে তার এ সই কাজ সম্পুর্ন হয়েছে মর্মে ছাড়পত্রে ব্যাবহার করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মিথ্যা সই নিয়ে সরকারী টাকা আত্মসাতকারীদের বিচার দাবী করেন তিনি।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম জানায়, মসজিদ কমিটি ও সাধারণ মুসল্লিরা মাবনবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও তার প্রতিনিধিসহ এর সাথে সংশ্লিষ্টরা মসজিদ নির্মানের নামের টাকা আত্মসাতকারীদের বিচারের দাবীতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানায় তিনি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত