বোরো চাল সংগ্রহে বস্তায় ডিজিটাল টেনসিল, আদমদীঘিতে চালকল মালিকেরা বিপাকে
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২১, ২১:৪০ | আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫
চালের বস্তার গায়ে ডিজিটাল টেনসিল বাধ্যতামুলক করায় চলতি আভ্যন্তরিন বোরো চাল সংগ্রহ মৌসুমে বিপাকে পড়েছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পৌনে দুই শ’ চালকল মালিক। পক্ষান্তরে পাশের নওগাঁ, নাটোর ও জয়পুরহাটে নেয়া হচ্ছে সাধারণ ব্লক টেনসিল ব্যবহার হচ্ছে বলে দাবী করেছেন আদমদীঘির চালকল মালিকরা। ডিজিটাল টেনসিল তথা বস্তা ছাপাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে সে পরিমাণ টাকার মুনাফা হবার আলামত দেখছেন না বলে দাবী করা হয়েছে। ফলে তারা চুক্তি করলেও সরকারি গুদামে চাল দিতে অনিহা দেখাচ্ছেন। কেউ কেউ নাম মাত্র চাল দিয়ে অবশিষ্ট চাল দেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। ডিজিটাল টেনসিলের পাশাপাশি ধানের দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ায় বিগত বছরের মত এবারো চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সফল না হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। বস্তার গায়ে ডিজিটাল টেনসিল বাধ্যতামুলক ব্যবস্থা গোটা বগুড়া জেলায় চালু করা হয়েছে বলে মিলারদের সুত্রে জানা গেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, প্রতি কেজি চালের দাম ৩ টাকা বাড়িয়ে এবার ৪০ টাকা কেজি দরে উপজেলার ১২ অটো চালকল সহ ১৭৭ চালকল থেকে মোট ৯ হাজার ৮৮৯ মেট্টিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করার জন্য বিভাজন অনুমোদন করা হয়েছে। বিভাজন নির্দেশনা জানার পর ধনী চালকল ব্যবসায়ীরা বস্তা প্রিন্টিং প্রেসে ছাপিয়ে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করা শুরু করলেও অনেক হাসকিং চালকল মালিক হাত গুঁটিয়ে বসে আছেন। তাদের দাবী ডিজিটাল টেনসিলের বাধ্যবাধকতার নির্দেশ বাতিল করে ব্লক টেনসিল দেওয়ার নির্দেশ পুনঃর্বহাল করা হোক। তাহলে তারা অতিরিক্ত লোকসানের হাত থেকে রেহায় পাবেন।
এব্যাপারে উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী আহমেদ আলী স্বপন বলেন, ৩০ কেজি চাল ধারণ ক্ষমতার একটি বস্তা ছাপিয়ে নিতে খরচ হচ্ছে কমপক্ষে দুই টাকা। তিনি বলেন আমার স্বয়ংক্রিয় এবং আধান্বয়ংক্রিয় দুই চালকল মিলে বরাদ্দ পেয়েছি ৬২৪ দশমিক ৩৩০ মেট্টিক টন। এই পরিমাণ চালের জন্য বস্তা ব্যবহার করতে হবে ২০ হাজার ৮১১টি। এই বিপুল পরিমাণ বস্তার ডিজিটাল টেনসিল খরচ ৪১ হাজার ৬২২টাকা। অথচ প্রায় আড়াই কোটি টাকায় ধান কিনে চাল উৎপাদন করার পর সরকারি গুদামে চাল দিয়ে ডিজিটাল টেনসিল খরচের সমান টাকার মুনাফা হবে কি-না তা এখনো অনিশ্চিত।
এবিষয়ে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান মুকুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বস্তায় ডিজিটাল টেনসিল দেওয়ার নির্দেশ জারী হয়েছে বিগত তিন মৌসুম আগে। এটা সরকারি নিদের্শ। সে কারণে আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। অন্য জেলায় কি করা হচ্ছে সেটা আমার জানা নেই। যদি তারা ব্লক টেনসিল গ্রহন করেন তাহলে তারা নির্দেশ অমান্য করছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত