বাড়িতেই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন ‘কাশ্মীরের নিউটন’

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২১, ২১:০৩ |  আপডেট  : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০২

‘কাশ্মীরের নিউটন’। শুনতে অবাক লাগলেও এই নামেই এখন ডাকা হচ্ছে মহম্মদ ইসমাইল মিরকে। মহামারী কবলিত দেশে এখন অক্সিজেনের চাহিদা তুঙ্গে। প্রাণবায়ু না পেয়ে প্রতিদিনই হাসপাতাল কিংবা বাড়িতে মৃত্যু হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের। এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসেই অক্সিজেন কনসেনট্রেটর বানিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন ৬০ বছরের ইসমাইল মির। এটি অন্য যেকোনও অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মতোই কাজ করবে।

মির উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করছেন। আর্থিক কারণে দ্বাদশ শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি। পড়াশোনা বেশিদূর না এগলেও বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর ভালোবাসায় এতটুকু ফাটল ধরেনি। প্রায় সময়ই নতুন কিছু তৈরি করে মানুষকে তাক লাগিয়ে দেন মির। যে কারণে তাঁর পরিচিতি হয়ে উঠেছে ‘কাশ্মীরের নিউটন’ নামে। 

কিন্তু, কীভাবে বাড়িতে বসে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর তৈরি সম্ভব হল? তার উত্তরে মির বলেন, ‘যন্ত্রটি তৈরি করতে তাঁর ২০ দিন সময় লেগেছে। মোট খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে কারখানায় তৈরি করা হলে আরও কম খরচ পড়ত বলে দাবি তাঁর। এটি আর পাঁচটা কনসেনট্রেটরের মতোই কাজ করবে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অক্সিজেনের যোগান দিতে পারে। আবার সমস্যা হলে তা নিজে থেকেই সারিয়ে নিতে সক্ষম।’ একেবারে সাধারণ সরঞ্জাম দিয়ে মির এই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন। একসঙ্গে কতজন এই মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন? জবাবে আবিষ্কর্তা বলেন, ‘কী ধরনের ফিল্টার ও কমপ্রেশার ব্যবহার করা হবে, তার উপর বিষয়টি নির্ভর করছে। ছোট হলে একজন ব্যবহার করতে পারবেন। আবার আকারে বড় হলে অনেকে ব্যবহার করতে পারবেন।’ ইসমাইলের কথায়, এই মেশিনটি বাড়িতে তৈরি হয়েছে বলে খরচ একটু বেশি পড়েছে। তবে এটি কারখানায় তৈরি করা হলে খরচ আরও কম পড়বে। 

এর আগে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় অটোমেটিক ভেন্টিলেটর বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ‘কাশ্মীরের নিউটন’। এছাড়াও ২০০৮ সালে তিনি একটি অত্যাধুনিক লণ্ঠন বানিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। তাতে আবার ফায়ার অ্যালার্ম লাগানো ছিল। রিমোট চালিত একটি খেলনা গাড়িও তৈরি করেছিলেন ইসমাইল। তাঁর কথায়, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে বিজ্ঞানের প্রতি ঝোঁক তৈরি হয়। ছোট থেকে ইচ্ছে ছিল পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করার। কিন্তু স্কুলে পদার্থবিদ্যা ছিল না। পরে বান্দিপোরার অন্য একটি স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকে (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) ভর্তি হন। স্কুলে পড়ার সময় স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনের জন্য প্রযুক্তিগত কিছু কাজ করে করেছিলেন। তখনই স্কুলের এক শিক্ষক মিরকে ‘নিউটন’ নাম দেন। এরপর থেকে তিনি হয়ে ওঠেন ‘কাশ্মীরের নিউটন’। আজ তাঁর প্রশংসায় বিজ্ঞানী মহল।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত