বাগেরহাট সংবাদ
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:৩৪ | আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১১
বাগেরহাটে প্রতিপক্ষের হামলায় দিন মজুর গুরুত্বর জখম-
বাগেরহাট মিজান সরদার (২৪) নামে এক দিন মজুরকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখমের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার চরগ্রাম এলাকার হোচেন সরদারের বাড়ির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় মিজান সরদারকে উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত মিজান সরদার বাগেরহাট সদর উপজেলার চরগ্রামের মোজাফর সরদারের ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মিজান সরদারের মা নাছিমা বেগম বাদি হয়ে বাগেরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে নাছিমা বেগম জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম বার্ষিকীতে খিচুরী খাওয়ার জন্য শুক্রবার রাতে আমার ছেলে মিজান সরদার বাড়ি থেকে বের হয়। পার্শ্ববর্তী চরগ্রামের হোচেন সরদারের বাড়ির সামনে পৌছালে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক হোচেন সরদার, তার স্ত্রী হাছিনা বেগম, মেয়ে সুমাইয়া আক্তারসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন আমার ছেলের পথ রোধ করে। তারা আমার ছেলের মুখে ওড়না দিয়ে পেচিয়ে টেনে হিছড়ে বাড়ির মধ্যে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তারা আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপায় ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে। আমার ছেলের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে অজ্ঞান অবস্থায় আমার ছেলেকে উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ফকিরহাটে কৃষক দম্পতির চুরি হওয়া সন্তান উদ্ধার-
বাগেরহাটের ফকিরহাটে কৃষক দম্পত্তির ঘর থেকে চুরি হওয়া আড়াই মাস বয়সী শিশু সন্তান সাজিদ ফারাজীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭মার্চ) গভীর রাতে খুলনা শহরের মিয়াপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশের একটি ব্যাগ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে খুলনা সদর থানা পুলিশ। এর আগে শুক্রবার (১৭ মার্চ) ভোরে উপজেলার জাড়িয়া-মাইট কুমড়া এলাকায় আবু সাঈদ ফারাজী ও সুমি খাতুন দম্পত্তির ঘরে এই চুরির ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হওয়া শিশু সাজিদ ফারাজী ওই এলাকার কৃষক আবু সাঈদ ফারাজী ও সুমি খাতুন দম্পত্তির ছেলে। সাঈদ-সুমির সাদিয়া নামের পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ জানায়, অপরাধীরা ব্যাগের মধ্যে শিশুটিকে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। সন্তানকে ফিরে পেয়ে খুশি বাবা-মা সহ এলাকাবাসী। তবে সন্তান চুরির সাথে জড়িতদের শনাক্ত এবং আটক করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। শিশু সাজিদের মা সুমি খাতুন বলেন, 'মনে হচ্ছিল আমার বুকের মধ্যে কি যেন নেই। পরানডা এখনই বের হয়ে যাবে। সারাদিন শুধু খাখা করেছে আমার বুক। আমার বাজানকে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। সব কষ্ট ভুলে গেছি।' শিশুটির বাবা কৃষক আবু সাঈদ ফারাজী বলেন, 'আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি এটাই শান্তি।' তবে চুরির সাথে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এই বাবা।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়ক পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, শিশু চুরির খবর পাওয়ার পর থেকে পুলিশ অভিযান শুরু করে। পুলিশের কঠোর তৎপরতায় অপরাধীরা শিশুটিকে ফেলে রেখে চলে যায়। আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। চুরির সাথে জড়িতদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাগেরহাটে চাঞ্চল্যকর দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামি গ্রেপ্তার-
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চাঞ্চল্যকর দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। শুক্রবার লবনচরা থানাধীন মাথাভাঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি হল মোঃ সুজন খলিফা।
র্যাবের পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, ২৬ ডিসেম্বর রাতে আসামিরা ভিকটিমের বসত ঘরের জানালা ভেঙ্গে সু-কৌশলে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরে অবস্থানরত ভিকটিম ও তার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রান নাশের ভয় দেখিয়ে প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ আনুষাঙ্গিক মালামাল লুটপাট করে। ডাকাতি শেষে আসামীরা ভিকটিমের স্ত্রীকে খাটের সাথে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। উল্লেখিত ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ করলে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে আসামীরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানায় ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা রুজু করেন। ঘটনাটি তখন বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং ডাকাতি ও ধর্ষণের সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে। র্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ও গোয়েন্দা সূত্র জানতে পারে উক্ত মামালার অন্যতম আসামী সুজন খলিফা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে থাকার পর কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশে এসেছে। উক্ত পলাতক আসামির কারণে মামলার তদন্ত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে মামলার অন্যতম আসামি মো: সুজন খলিফা লবনচরা থানাধীন মাথাভাঙ্গ এলাকায়অবস্থান করেছে। এমনসংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে আসামিকে তারা গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে মোরেলগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত