বাগেরহাটে হাকিমপুর সামসুল হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনের নির্মাণ কাজে কচ্ছপ গতি

  স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট 

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২২, ১৯:২৫ |  আপডেট  : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৫

বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হাকিমপুর সামসুল হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজের মেয়াদ গত ১৬ মাস পূর্বে শেষ হলেও এখনও অধিকাংশ কাজ চলমান রয়েছে। সেই কাজ গুলি শুরু বা শেষ না করেই কাজের বরাদ্দকৃত সিংহভাগ অর্থ তুলে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। আর এধরনের ঘটনা নিয়ে ঐ বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্যদ, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকাবাসীর মাধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম ক্ষোভের। অতিদ্রুত বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হন্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচিত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জেলার হাকিমপুর সামসুল হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মান কাজের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হয়। এ প্রকল্পের ২৩৩৫৩৭ নং টেন্ডার আইডির ই-জিপি/ডøাবলু-১৩/ইইডি/বিএ জেড/এনইএস/২০১৮-১৯নং ইনভাইটেশন মূলে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ২০১৮ সালের ৮ই নভেম্বর টে›ডার-ড্র হয়। এবং মেসার্স আব্দুল মান্নান নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটির কাজ পায়। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ বাগেরহাট ৩,০২,৬৬০০০ টাকা দরপত্রের মূল্যে কার্যাদাসের ৫৪০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্তের সময় নির্ধারন করে ২০১৯ সালের ৬ই জানুয়ারী যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল মান্নানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু ৫৪০কার্যাদেশের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির বাধ্যবাধকতা থাকলেও নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে প্রায় ১৬ মাস পূর্বে। কিন্তু তার পরেই এই প্রকল্পে কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পে ৩ ভাগে ভাগ করে পার্ট-এ (সিভিল ওর্য়াকাস) সাব-স্টাকচার খাতে ব্যয় নিধারন করা হয়েছে প্রায় ২,৬৩,৯৭৬২ টাকা ১২৪ পয়সা,পার্ট-বি (সেনেটারী ওয়ার্কাস) খাতে ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ১৫,৩১,৪৭৪ টাকা ৪৯ পয়সা,পার্ট-সি (ইলেক্ট্রিক্যাল ওয়ার্কাস) খাতে ব্যয় নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ১৬,৩১,১৯৪ টাকা ৫১২ পয়সা, এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩,০২,৬৬০০০ টাকা ।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ কামাল হোসেন তরফদার বলেন, ভবনের নির্মান কাজ শুরুর পর থেকে অনেকটা গড়ি মশি করে নির্মান কাজ চালাতে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি প্রায় দুই মাস ধরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ন রুপে বন্ধ করে দিয়েছেন। করে নাগাদ পুনঃরায় শুরু করবেন তাও কেউ বলতে পারেন না। এ অবস্থায় শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নেমে যাওয়ার আশংকা করছেনও তিনি।

বিদ্যালয়টির (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক নিখিল কুমার ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মান্নান ট্রেডার্স বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে দিনের পর দিন এভাবেই ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে নির্মান কাজ করছে। কিন্তু কেউ কোন কথা বলছেনা। তারা ইতিমধ্যে প্রায় ১৬ মাস পূর্বে নির্ধারিত সময় সীমা পার করে ফেলেছে। এর মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ম্যানেজিং কমিটির নিকট কয়েক বার সময় বৃদ্ধি করার জন্য আবেদন করলেও আমরা তা গ্রহন করিনি। তাদের কচ্ছপ গতি কাজের জন্য বর্তমানে ভবন সংকটে পাঠদান কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মোঃ রিপন বলেন, করোনার কারনে ও ডিজাইন জনিত নানা সমস্যার কারনে নির্মান কাজ শুরু করতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এ অবস্থায় আমরা সময় বৃদ্ধি করার জন্য আবেদন করেছি। নির্মান কাজের ধীরগতি প্রসংঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বাগেহরহাট শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী অঞ্জন কুমার দাস বলেন, বর্তমানে নির্মাণ কাজ এখন বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়টি আমরা বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। চলতি মে মাসের শেষের দিকে নির্মাণ কাজ পূনঃরায় শুরু করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগের হিসাব রক্ষক শফিউল আযম (ইডেন) এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে রয়েছি, তাই কি পরিমান বিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তুলেছেন তা আমি বলতে পারছি না।

বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাফিজ আক্তার ছুটিতে ওমরা পালনে সৌদি আরব থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত