বাগেরহাটে বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মী আটক, দলীয় কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯:৩৭ |  আপডেট  : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৬

বাগেরহাটে বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ২১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে কাটাখালি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এদের আটক করা হয়। বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গনমিছিল বানচাল করতে এসব নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির নেতারা।

এছাড়া বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিমের বাড়ি, শহরের সরুইস্থ দলীয় কার্যালয় এবং শ্রমিক দলের সাবেক জেলা সভাপতি সরদার লিয়াকত হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়ে ওই ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিমের। দলীয়  কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা এবং পুলিশের আটকের ফলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে পারেনি দাবি বিএনপির।

এদিকে শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কের কাটাখালি মোড় এলাকায় গন মিছিল করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মিছিলে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমির এ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ ইউনুসসহ সহগ্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, শনিবার সকাল দশটার দিকে আমার চাচাতো ভাই আলী রেজা আহমেদের স্ত্রী মারা গেছেন। সেজন্য আমরা পারিবারিকভাবে দুঃখ ভারাক্রান্ত রয়েছি। আমরা নিহতের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের শতাধিক মোটরসাইকেল এসে আমাদের বাড়ি আক্রমণ করে। মৃত্যুর খবর শুনে বাসার সামনে আসা আশা স্বজন ও প্রতিবেশীদের ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের বসার জন্য আনা চেয়ার ও বাড়ির ভেতর ঢুকে রুমের দরজা-জানালা ভাংচুর করে। তাদের আমরা যতই বলি, এখানে একজন মানুষ মারা গেছে। এর জন্য লোকজন আসছে, এরা সবাই আমাদের স্বজন, তা না শুনেও সব কিছু ভেঙে চলে গেছে। এটা কি হচ্ছে। আমার কিছু বলার ভাষা নেই।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম আরও বলেন, সারা দেশে বিএনপির গণমিছিলে কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সকাল থেকে আমাদের অফিস পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। আমাদের কোন নেতাকর্মীরা ভেতরে ঢুকতেই পারেনি। সেখানে মিছিল করার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে। যাকে পাচ্ছে তাকে আটকের তাৎপরতা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা মিছিল করতে পারেনি। 

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত গন মিছিলের সকল আয়োজন করা হয়েছিল বাগেরহাটে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এসে আমাদের অফিসের দরজা, জানালা ভাংচুর করেছে। অফিস তালাবদ্ধ থাকায়, দেওয়াল টপকিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে তারা হামলা-ভাংচুর করে। এছাড়া গেল দুই-তিনদিন ধরে আমাদের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়ি হামলা ও ভাংচুর করেছে। এছাড়া পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদেরও গ্রেফতার করেছে। যার কারণে আমরা কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে পারিনি।'

বাগরেহাট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করীম বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ আমাদের ১৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। আমরা আটক নেতাকর্মীদের নিশর্ত মুক্তি চাই।

ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আলিমুজ্জামান বলেন, এসআই সঞ্জয় বাদী হয়ে একটি নাশকতা মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় কাটাখালিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২১জনকে আটক করা হয়েছে। 

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, হামলা ভাংচুরের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের কাছে কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ মনির হোসেনকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়া বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিনের মুটোফোনটি বন্ধ ছিল।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত