বাগেরহাটে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে জাল পর্চা-দাখিলা তৈরির অভিযোগ

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৮:৩৯ |  আপডেট  : ১৩ মে ২০২৪, ১৬:৫৮

বাগেরহাটের শরণখোলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের বিরুদ্ধে  প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল পর্চা, মিউটেশন ও দাখিলা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শরণখোলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। একের পর এক অনিয়মে অতিষ্ট হয়ে মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন শরণখোলা দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা।

শরণখোলা রেজিষ্ট্রি অফিস ও দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২২ সেপ্টেম্বর মোঃ আঃ রাজ্জাক হাওলাদার একটি দলিল নিবন্ধনের জন্য দাখিল করেন। কিন্তু ওই দলিলের সাথে দাখিলকৃত ৭ নং দক্ষিন রাজাপুর মৌজার এস.এ ১৪৪০ নং খরিজ খতিয়ান দাখিল করেন। দাখিলকৃত ওই খারিজ খতিয়ান শরণখোলা সাব-রেজিষ্ট্রারের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে ওই খতিয়ানটি সঠিক কিনা তা জানতে সহকারী কমিশনার ভূমি‘র কাছে প্রেরণ করা হয়। পরের দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব সহকারী কমিশনার ভূমি) ওই খতিয়ানটি সঠিক নয় মর্মে প্রতিবেদন দেন। সেই সাথে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়। এই চিঠির প্রেক্ষিতে দলিল লেখক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর সুপারিশ করেন শরণখোলা উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ আবু রায়হান।

এর আগে ২০১৭ সালেও একটি দলিলেও কাগজপত্র জালিয়াতি ও ভুয়া লোককে জমির মালিক সাজিয়ে দলিল দাখিল করেছেন আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার। তখন আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের সাথে আবুল হোসেন নামের আরেকজন দলিল লেখক ছিলেন। তখন ওই দলিল নিয়ে হইচই হলে তৎকালীন শরণখোলা উপজেলা সাব রেজিষ্টার লুৎফুন নাহার লতা আব্দুর রাজ্জাক ও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করেন। তদন্তের আব্দুর রাজ্জাক ও আবুল হোসেনের অনিয়ম এবং প্রতারণার বিষয়টি প্রমানিত হয়। শরণখোলা উপজেলা সাব রেজিষ্টার লুৎফুন নাহার লতা আব্দুর রাজ্জাক ও আবুল হোসেনের লাইসেন্স বাতিলের জন্য জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আবেদন করেন।

শরণখোলা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ আঃ হাকিম হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ জালাল আহমেদ রুমি বলেন, দলিল লেখক আব্দুর রাজ্জাকের প্রতারণা ও অনৈতিক কাজ কর্মে শরণখোলা দলিল লেখক সমিতি খুবই বিব্রত। আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সমিতির জরুরী সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা রেজিষ্ট্রার বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দলিল লেখক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি কোন অনিয়ম করি নাই। আমার এক সহকর্মীর সাথে আমার কিছু ভুলবোঝাবুঝি রয়েছে। তিনি এসব অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন।

শরণখোলা উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোঃ আবু রায়হান বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনে অনিয়ম ও দূর্নীতির অপরাধে দলিল লেখক আব্দুর রাজ্জাককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা পূর্বক পরবর্তীতে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত