বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরো বড় পরিসরে সিনেমা নির্মাণের তাগিদ

  বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২০ |  আপডেট  : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনের নানা অংশ এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরো বড় পরিসরে সিনেমা নির্মাণের তাগিদ দিলেন বিশিষ্টজনেরা।  সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিনের সেমিনারে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।

মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা জাকির হোসেন রাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি অসীম সাহা। কী নোট- উপস্থাপন করেন শিশু সাহিত্যিক হানিফ খান, সাংবাদিক মো. জহিরুল ইসলাম।  

আলোচনা করেন দৈনিক বঙ্গজননী’র প্রধান সম্পাদক আলী নিয়ামত, চলচ্চিত্র নির্মাতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ন কবির ঢালী। সেমিনার সেশনটি উৎসর্গ করা হয় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত সকল চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের প্রতি।  

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব, কবি মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার। এতে দীর্ঘ গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন গবেষক আবু সাইদ তুলু। আলোচনায় অংশ নেন গবেষক, কবি ড. নাঈমা খানম, চলচ্চিত্র নির্মাতা কবিরুল ইসলাম রানা, চলচ্চিত্র সমালোচক সোহরাব সুমন, ছড়াকার-চলচ্চিত্র নির্মাতা মনজুরুল ইমরান। সেমিনারের এই সেশনটি উৎসর্গ করা হয়, সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উপদেষ্টা প্রয়াত বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও অধ্যাপক ড. ইনামুল হকের স্মৃতির প্রতি।

এছাড়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষালের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান এবং ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সুবর্ণজয়ন্তী’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিথি ও প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক খান। কী-নোট উপস্থাপন করেন গবেষক মনজুরুল ইসলাম মেঘ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিজ্ঞান কবি হাসনাইন সাজ্জাদী, গবেষক, নাট্যকর্মী ড. চঞ্চল সৈকত, চলচ্চিত্র নির্মাতা অপূর্ব রায়, সাংবাদিক লোকমান হোসেন পলা। সেমিনারের এই সেশনটি উৎসর্গ করা হয় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের যে সকল সেনাবাহিনীর সদস্যরা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি।  

সেমিনারে উৎসবের উপদেষ্টা নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু বলেন, ‘এই ধরনের উৎসব সত্যি প্রশংসনীয়। সেলুলয়েডের সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করলে, বঙ্গবন্ধুর অংশটুকু ব্লেট দিয়ে তুলে ফেলতে হতো অথবা সিনেমা আমরা প্রদর্শন করতে পারতাম না। এখন আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছি, আগামীতেও নির্মাণ করবো। আমরা উৎসবের আয়োজন করেছি, আগামীতেও এই উৎসব চলবে। ’

উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, ‘আমি এই সেমিনার থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি, মুজিববর্ষে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা ১২১টি দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে অনুষ্ঠান করেছি, ব্যক্তিগত অর্থায়নে এই ধরণের উৎসব চলতে পারে না, সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। ’

উৎসব পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ জানান, সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে শুধু বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবেসে তিনি এই আয়োজন করেছেন। তিনি আরো জানান ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষ ঘোষণার পরের দিন ই তিনি আয়োজন করেছিলেন প্রথম বাংলা আদি সংস্কৃতি উৎসব। সেটি বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গকৃত মুজিব বর্ষের প্রথম কোন আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান।  

উল্লেখ্য, ৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। উৎসব চলবে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত, সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি। উৎসবে বাংলাদেশসহ ১২১টি দেশের ৬০০ চলচ্চিত্র মনোনীত হয়েছে, সেগুলি মধ্যে থেকেই জুরিদের রায়ে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে সমাপনী অনুষ্ঠানে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত