ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এই আত্মসমর্পণ : মাহমুদুর রহমান
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ | আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:২৯
মিছিল নিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসা আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে নিরাপত্তার জন্য আদালত এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তিনি।ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতেই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিজেদের মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। মেরুদণ্ড সোজা রাখবার জন্য আমি এসেছি।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর)সকালে আদালত প্রাঙ্গণে আত্মসমর্পণের আগে এসব কথা বলেছেন মাহমুদুর রহমান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আইনে যেটা আছে বাংলাদেশে সেই আইন অনুযায়ী আমি আত্মসমর্পণ করব। আমার লড়াই অব্যাহত রাখবো। যদিও এই মামলা সর্ব মিথ্যা এবং একটা উদ্ভব ব্যাপার। আমার লড়াই অব্যাহত থাকবে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাহমুদুর রহমান পুরান ঢাকার জনসন রোড দিয়ে হেঁটে আসেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দিকে। এসময় তার সঙ্গে বেশকিছু অনুসারী ছিল। তাদের মিছিলের সামনে ছিল একটি প্রাইভেট কার। তারও সামনে ছিল দুইটি পিকাপ। তখন অনুসারীরা হুঁশিয়ার সাবধান বলে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।তারা আদালতের গেটের সামনে আসলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে মিছিলসহ আদালতে প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে তাদেরকে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মাহমুদুর রহমান সাত বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি। সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ ৫ জনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন— জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সা/ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত