পেনডামিক তন্ত্র
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩৬ | আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৬
এতোটাই ব্যক্তিগত হয়ে গেছে পুরোনো জানালাটি,
এর বুক ভেদ করে যতদুর চলে যায়
বেদুইন মেয়ের ঘোড়া...
ততদূর শুধুই ফুটে আছে আধবুড়ো জোছনার নির্ভার ফুল
দূর ...বহুদূর পর্যন্ত নেই একটিও ছায়াচ্ছন্ন রাস্তা...
পাহাড় ঢাকেনি ক্লিভেজ লঘু নীল রঙে।
কিছু প্রাণহীন মানুষ ... খানিকটা ক্লান্ত আগাছার মতো
অপমানিত মুখ নিয়ে উবু হয়ে বসে আছে পথের ধারে...
একখানি মৃত্যু শীতল অতি বেগুনি রশ্মি তাদের হৃদপিণ্ড কামড়ে চিবিয়ে খাচ্ছে
ঠিক যেমন পেঙ্গোলিনে হিংস্র ডানা সাজায় বাদুরের দল
আমাদের ফুসফুসের ভার নিয়েছে আগ্নেয়গিরি
যে ঘাগড়া পরে যাযাবর মেয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল ঘর ছেড়ে সমুদ্র দেখতে
সে পৌঁছনোর আগেই তার ঘাগড়ায় আঁকা হয়ে গেছে সাতখানা সমুদ্র ও তেরোটি ব্যথার নদী...
গভীর নিম্নচাপে মৃত্যু ভয়ে ফুলে ফুলে উঠছে লবন ঢেউ...
ধমনীতে বয়ে যাচ্ছে অম্লস্বাদের অসুখ ...
অথচ ছোটবেলায়ই চিনে নিয়েছিল সে বিশল্যকরণীর লালচে পাতার সরল জ্যামিতি।
এই প্রবল ঝড়ের দিনে হারিয়ে যাচ্ছে অমলতাসের বনের ঠিকানা
তবু গাছের ছালে এখনও লেখা আছে উড়নচণ্ডী মানুষদের পূর্বপুরুষের নাম...
প্রশান্ত চন্দ্রভাগার জলে ভাসমান জলের মিহিন মন্ত্র ঠোঁটে তুলে নিচ্ছে এক মাছলোভী সারস...
একটু পরেই এই ঝাউয়ের তীরে সূর্য নেমে আসবে।
আগুন হয়ে হাওয়ায় হাওয়ায় ঘর পাল্টাবে মাছরাঙার দল
শুধু ওড়নাটি উড়ে যাবে জেনকিন্স স্কুলের নির্জন কোনও ক্লাশরুমে...
জীবনের প্রথম কুসুম ছাই হয়ে উড়েছিলো যে সন্ধের চাতালে,
সেখানে এখন বসেছে কবিতার আড্ডা।
তর্কবাগীশ চড়াইয়েরা বলছে পেনডামিক হলো নির্মল ওষুধ বিন্দুরই আরেক নাম
ওরা উঠোন থেকে খুঁটে খেয়ে নিচ্ছে মাটির উষ্ণতা...
যে মৃত্যুর প্রস্তুতি বয়ে নিয়ে এসেছিল নীল ট্রেন অমনোযোগী গ্রাম ও শহরে...
সেও এখন শোকে নদীতে স্নান করে গায়ে মেখে নিয়েছে কয়েক ফোঁটা গ্রীষ্ম
আমাদের সমস্ত কথাবার্তা ও লকডাউনকে প্রত্যাখ্যান করে হরিণেরা দখল করেছে সাম্রাজ্য...
এইসব দুঃসময় ওরা আর বইবে না
আত্মঘাতী মানুষের দলকে ফু দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে যাবে হরপ্পার ধ্বংসাবশেষ দেখাতে...
শেখাবে কী করে গাছের ছায়ার তলায় পেতে নিতে হয় সংসার,
পাতায় ঢেকে দিতে হয় শহরের কঙ্কাল...
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত