পাকিস্তান পার্লামেন্ট বিলুপ্ত, ফেব্রুয়ারির পর নির্বাচনের ঘোষণা

  অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩৭ |  আপডেট  : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৪৮

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শ অনুযায়ী পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।

বুধবার রাতে জাতীয় পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগেই এটি ভেঙে দেন তিনি। ১২ অগাস্ট জাতীয় পরিষদের মেয়ার পূর্ণ হতো।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শরিফের পাঠানো একটি সারসংক্ষেপ মধ্যরাতের আগেই অনুমোদন করেন আলভি। এর মাধ্যমে শরিফ সরকারেরও অবসান ঘটে।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ দিনটিতে শরিফ তার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, পার্লামেন্টে একটি বিদায়ী ভাষণ দেন এবং প্রবাসী পাকিস্তানিদের দুটি বৈঠকে যোগ দেন ও ইসলামাবাদে একটি ‘অলিম্পিক ভিলেজের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের ইংরেজি ভাষার দৈনিক ডন।

জাতীয় পরিষদ বিলুপ্তির মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের পট প্রস্তুত হল। এখন একটি কেয়ারটেকার সরকার গঠন করা হবে। শরিফ ও বিলুপ্ত জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলগুলোর নেতারা এই তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন বেছে নেবেন।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টে ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারই জাতীয় নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি জানান, তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার তিনি পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন, তাদের বৈঠকে উভয়পক্ষ থেকে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে।

তবে এ বছর নভেম্বরে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দেশে নতুন আদমশুমারির কাজ শুরু হওয়ায় ভোট কয়েক মাস পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আদমশুমারি সম্পন্ন করতে এবং নতুন নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করতে প্রায় চার মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দেশটির বিদায়ী সরকারের আইনমন্ত্রী।

যার অর্থ, নভেম্বরে যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল সেটা অন্তত কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে; পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা কুনওয়ার দিলশাদ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন।

তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বেশ জটিল রূপ নিতে যাচ্ছে। নতুন আদমশুমারির অর্থ পুরো দেশজুড়ে নতুন করে নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাংবিধানিকভাবে প্রয়োজনীয় সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। যার অর্থ, আগামী বছর ফেব্রুয়ারির আগে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে বেশি দেরি হলে তাতে জনঅসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে আর তাতে পারমাণবিক শক্তিধর দেশটিতে বিদ্যমান অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।

কারাদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান।

পরে তোষাখানা দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। এরপর তাকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।

পাকিস্তানের নিয়মানুযায়ী, দোষী সাব্যস্ত কোনও ব্যক্তি দেশটির নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত