এক রাতে ১০টি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন
পদ্মার ভাঙ্গন: লৌহজংয়ের মানচিএ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আরেকটি ইউনিয়ন
প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:৩৩ | আপডেট : ৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৪
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার ভাঙ্গনে লৌহজংয়ের মানচিএ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে উপজেলা লৌহজং -তেউটিয়া ইউনিয়নটি । রাক্ষুসী পদ্মার কড়াল গ্রাসে লৌহজং উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে বর্তমানে রয়েছে ১০ টি ইউনিয়ন এর মধ্যে শুধু মাএ একটি ইউনিয়ন বৌলতলী ছারা বাকি ৯টি ইউনিয়নে কম বেশি নদী ভাঙ্গনের খেলা চলছে । এর মধ্যে কলমা ইউনিয়ন, বেজগাঁও গাঁও ইউনিয়ন, লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন, কুমারভোগ ইউনিয়নের ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশি । তার মধ্যে লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড সহ বাকি ৮ টি ওয়ার্ডে বেশ কিছু অংশ পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মা আবারও রুদ্র মুর্তির আকার ধারন করেছে । এতে পদ্মা তীরের মানুষের ঘুম নেই, বিরাহীন বৃষ্ঠিতে দিশেহারা অবস্থায় শেষ সম্বল টুকু রক্ষার চেষ্ঠা করছে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা । উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বড়নওপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে ১০টি বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় এক নিমিষে । গত দুই দিন ধরে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে এই এলাকায় । এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতে বড় নওপাড়া গ্রামের নীল কমল রাজবংশী, জীতেন রাজবংশী, সুধন্য রাজবংশী, স্বপন রাজবংশী, মিলন রাজবংশী, যোগেশ রাজবংশী, মানিক ব্রক্ষম, লেলিন মাঝি, ইকবাল মৃধা ও রিদয় মৃধার বসত বাড়ি পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে যায় ।
লৌহজং -তেউটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, এদিকে পদ্মা ভাঙ্গনের খবর পেয়ে জরুরী ব্যবস্থা হিসেবে নদী শাসন ও ভাঙ্গন রোধে শুক্রবার সকাল থেকে পুরোদমে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে । পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে ৩২ কোটি টাকার সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ২৫০ কেজি ওজনের প্রায় ৮ লাখ বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে । এরপর বালু ও সিমেন্ট মিশ্রিত আরোও পোনে ২ লাখ বস্তা ফেলা হবে পদ্মা সেতুর বাম তীরে । মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি লৌহজং -তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামের ভাঙ্গন কবলীত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন । । এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই প্রায় দেড় কিলোমিটার যায়গা নদী গর্ভে চলে গেছে । তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধি তৎপরতায় ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় দ্রুত গতিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে ।
মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আপদকালিন এ সময়ে আমরা জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্ঠা করছি । এদিকে লৌহজংয়ের খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ির দিঘীর পাড় পর্যন্ত ৯.১০ কিলেমিটার দীর্ঘ এলাকায় পদ্মা ভাঙ্গন রোধে সরকার প্রায় ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে গত বছরের এপ্রিল থেকে । ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের প্রকল্পটি সম্পুর্ন হওয়ার কথা । কাজের অগ্রগতি মাএ ২০ শতাংশ । এই কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের । স্থানীয় সাংসদ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, পদ্মার ভাঙ্গন রোধে ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার বাধ ঁ নির্মান চলাকালিন এর বাইরে আরোও সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় নতুন ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহন করা হয় । তবে বর্ষা মৌসুমের আগেই আকর্ষিক নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা শুরু হয়েছে । তিনি বলেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী ভাঙ্গন রোধে সকল চেষ্ঠাই চালাচ্ছেন । শুধু বালুর বস্তা ফেলাই নয় ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে । যারা পদ্মা নদীতে অবৈধ ভাবে ড্রেজিং করে বালু কাটছে তাদের কোন ছাড় নেই । অবৈধ বালু লুট কারীদের বিরেুদ্বে ব্যবস্থা গ্রহন করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী নরেন্দ্র সংকর চক্রবর্তী জানান, পদ্মা ভাঙ্গন রোধে ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার ৯.পয়েন্ট স্থায়ী বাধঁ নির্মান প্রকল্পের কাজ চলছে । এর সাথে আরোও ৪. পয়েন্ট ৩২ কোটি টাকার প্রকণ্প হাতে নেয়া হয়েছে । বর্তমানে নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরী ভিত্বিতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ।
ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত