পঞ্চগড়ে নারী গোল রক্ষক ইয়ারজানের বাড়ীতে ডিসি, ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রতি
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৪, ১৯:১৯ | আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৭
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে এক অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে পঞ্চগড়ের মেয়ে ইয়ারজান। ফলে ফাইনালে ভারতকে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে হারানো সম্ভব হয়েছে গোলরক্ষক ইয়ারজানের উদ্যাম নৌপুন্য ও পূর্ণদক্ষতায়।
ইয়ারজানে বাড়ী পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নে। হত দরিদ্র পরিবারের কণ্যা গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম। তার বাবা অসুস্থ, দিনমজুর মায়ের আয়েই চলে তাদের ৪ সদস্যের সংসার। জরাজীর্ণ ঘরে দুয়ারে তার বেড়ে ওঠা। নেই গোছানো সাজানো আসবাপত্র‘ নেই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট। এমন অবস্থায় তার বাড়িতে গেলেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেলে জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম ইয়ারজানের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় উপহার হিসেবে নগদ টাকাও তুলে দেন তাদের হাতে। আশ্বাস দেন ঘর করে দেওয়ার। এসময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম, সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দীন, ইয়ারজানের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দীন, ক্রীড়া সংগঠক এটিএম আখতারুজ্জামান ডাবলু, ইউপি সদস্য জুলহাস উদ্দীন প্রমুখ।
ইয়ারজান বেগমের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে। তিনি সেখানকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। ইয়ারজান সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন নেপালের মাঠে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার দল। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপারের ট্রফিটাও নিজের করে নিয়েছেন তিনি। রোববার নেপালের মাঠে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় ইয়ারজানরা। খেলায় ভারতকে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে কেবল গোলরক্ষক ইয়ারজানের বীরত্বেই। ইয়ারজানের এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস বইছে জেলা জুড়ে। খুশি আর এ জেলার সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে।
ইয়ারজানের মা রেনু বেগম বলেন খুব কষ্ট করে আমার মেয়ে এই পর্যন্ত এসেছে। মানুষের কৃষিজমিতে কাজ করে মেয়েকে বড় করেছি। অভাবের সংসারে মেয়েকে তিনবেলা ঠিকমতো খাওয়াতে পারিনি। তার ইচ্ছাশক্তি আমাদের মুখ উজ্জল করেছে। বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেয়ের সাফল্যের গর্বে আমার বুক ভরে গেছে। বাড়িতে এত মানুষ দেখে খুব ভালো লাগছে আমার। আমার মেয়ে আমাকে অনেক বেশি সম্মান এনে দিয়েছে, এত বেশি প্রত্যাশা কখনোই ছিলো না। আমি কিচ্ছু চাই না, শুধু মানুষের ভালোবাসা চাই।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হবার নেপথ্যে সবচেয়ে বেশি অবদান ইয়ারজানের। ইয়ারজান আমাদের সন্তান, সে আমাদের পঞ্চগড়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমরা সবসময় তার পরিবারের পাশে আছি।
ই
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত