নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পূর্ণ স্নানে লাখো মানুষ
প্রকাশ: ৯ এপ্রিল ২০২১, ১৪:১৪ | আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮
করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সকল ধরনের গণজমায়তে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই সুনামগঞ্জ সীমান্তের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান এ জাদুকাটা নদী।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জানান, চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে জাদুকাটা নদীতে স্নান করলে সব পাপ মোচন হয়ে যায় বলে প্রচলিত রয়েছে। পুণ্য লাভের আশায় প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসময়ে লাখো মানুষ আসেন জাদুকাটা বা পুণ্যতীর্থে স্নান করতে।
তারা আরও জানান, এ নদীতে স্নান করাকে অনেকে গঙ্গাস্নানের সমতুল্য মনে করেন। কিন্তু করোনার কারণে গত বছরও স্নানের অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। তাই এবছর লকডাউনের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই তারা গঙ্গাস্নানের জন্য একত্রিত হয়েছেন।
প্রচলিত আছে, ১৪০০ খ্রিস্টাব্দে মাকে গঙ্গাস্নান করানোর যোগসাধনা করে পৃথিবীর সমস্ত তীর্থের জল জাদুকাটা নদীর প্রবাহমান জলে একত্রিত করে মাতৃআজ্ঞা পূরণ করেন তখনকার লাউর রাজ্যের সাধক ও সিদ্ধপুরুষ অদ্বৈতচার্য। তার সাধনাসিদ্ধ ফল বারুনী যোগ নামে পরিচিত।
চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীসহ সাত পুণ্যনদীর প্রবাহ একসঙ্গে জাদুকাটায় (পুণ্যতীর্থে) এসে মিশে বলেও বিশ্বাস করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এজন্য তারা মনে করেন এটি সেরা তীর্থস্থান। এখানে স্নান করলে গঙ্গাস্নানের চেয়েও বেশি পুণ্য হয় বলে বিশ্বাস রয়েছে তাদের মধ্যে।
সিলেট থেকে আসা সিমান্ত চক্রবর্তী বলেন, অনেক কষ্ট করে পুণ্যস্নান করতে এসেছি। গত বছর লকডাউনের জন্য আসতে পারিনি। কিন্তু এবছর টাকা বেশি খরচ করে ঝুঁকি নিয়ে মনের আশা পূরণ করতে এসেছি।
দোয়ারা বাজার থেকে আসা নিতিশ দে বলেন, আগামী বছর বাঁচব কি না জানিনা। তাই লকডাউনের মাঝে পুণ্যস্নান করতে চলে এসেছি। যা হবার হবে।
নেত্রকোণা থেকে আসা অরুণ দে বলেন, বাড়তি টাকা খরচ করে স্নানের জন্য এসেছি। এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় একটি অনুষ্ঠান। প্রশাসন এটি সীমিত আকারে করার ব্যবস্থা করে দিতে পারতো।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সব রকমের চেষ্টা করছি জাদুকাটায় (পুণ্যতীর্থে) যাতে কেউ গণজমায়েত না করে। কিন্তু সরকারি বিধি উপেক্ষা করেও অনেকই সেখানে গঙ্গাস্নান করছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত